তুলসী গাছের নাম শুনেনি, এমন মানুষ বোধ হয় পাওয়াই যাবে না। আশে পাশে, বাসা বাড়ির ছাদে, টবে তুলসী গাছই বেশি দেখা যায়। তুলসী একটি বহুল পরিচিত ভেষজ গাছ। ঠান্ডা, সর্দি, কাশি নিরাময়ের বিশেষ ক্ষমতায় জন্যই মূলত তুলসীর এত পরিচিতি। আজকে আমরা তুলসীর সম্পর্কে বিস্তারিত জানব, তুলসী পাতার উপকারিতা, তুলসী পাতার অপকারিতা ( Side effects) ও ব্যবহার বিধি।
তুলসী (Holy Basil, বা tulasī) এর বৈজ্ঞানিক নাম – Ocimum Sanctum। এটিকে Holy basil বা পবিত্র গাছ ও বলা হয়ে থাকে। এটি একটি ঔষধিগাছ। তুলসী শব্দের অর্থ যার তুলনা নেই। তুলসী একটি সুগন্ধি উদ্ভিদ। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে তুলসী একটি পবিত্র উদ্ভিদ। পুরান ও বেদে তুলসীকে সীতা স্বরূপা, লক্ষী স্বরুপা, বিষ্ণুপ্রিয়া,, কল্যাণী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তুলসীকে বায়ুনাশক, কৃমিনাশক ও বলা হয়ে থাকে। তুলসীকে “Queen Of Hurb ” বা ওষুধি গাছের রানী বলা হয়।

বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
নিচে তুলসী পাতার বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস দেওয়া হলঃ
তুলসী পাতা |
শ্রেণীবিন্যাস |
রাজ্য |
Plantae |
উপজগত |
Viridiplantae |
বর্গ |
Lamiales |
পরিবার |
Lamiaceae |
প্রজাতি |
O.tenuiflorum |
গণ |
Ocimum |
দ্বিপদী নাম |
Ocimum tenuiflorum |
বাহ্যিক রূপ
এটিঘন শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট ছোট আকারের উদ্ভিদ। এটি দুই থেকে তিন ফুট উচু হয়ে থাকে, এটি একটি গুল্ম জাতীয় গাছ। তুলসী চিরহরিৎ গাছ ( সারা বছরই এই গাছে সবুজ পাতার দেখা মিলে)। পাতার কিনারা খাজকাটা প্রকৃতির হয়। জুলাই, আগস্ট বা নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসে এতে মঞ্জরি দেখা যায়। এর ফুল ফল পাতাতে ঝাঁঝালো একটা গন্ধ আছে। তুলসী গাছ অনেক অক্সিজেন সরবরাহ করে, তাই একে অক্সিজেন ভাণ্ডার ও বলা হয়ে থাকে।

ব্যবহার
তুলসী গাছ বা পাতা এমন এক ভেষজ উদ্ভিদ যার পাতা থেকে শুরু করে শিকড় পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চলুন দেখে নেওয়া যাক আমাদের দক্ষিণ এশিয়াতে তুলসী গাছের কি কি ব্যবহার করা হয়।
১.পাতা
২.বীজ
৩.ডাল
৪. শিকড়
রিলেটেডঃ অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অশ্বগন্ধার অপকারিতা
তুলসী পাতার জন্ম
বাংলাদেশ ও ভারতের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে তুলসী গাছের দেখা মিলে। হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষরা তুলসী গাছ কে দেবী রূপে পূজা করে থাকে। তাই হিন্দুবাড়িতে তুলসী গাছ দেখা যায়। ভারতে বানিজ্যিকভাবে তুলসীর চাষ হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ভেষজ চিকিৎসায় ও ওষুধ শিল্পে তুলসী বহুল পরিমানে ব্যবহার করা হয়।
প্রকারভেদ
বাংলাদেশে সাধারণত চার রকমের তুলসী গাছ দেখা যায় –
১. রাম তুলসী ( সবুজ পাতা)
২.কৃষ্ণ তুলসী ( বেগুনী পাতা)
৩.বাবুই তুলসী
৪. শ্বেত তুলসী

উপাদান
তুলসীতে যেসব উপাদান বা গুনাগুন রয়েছে তা হলঃ
১. ভিটামিন সি
২. এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান
৩. এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান
৪. ফাইটোনিউট্রইয়েন্টস
৫. এসেনসিয়াল অয়েলগুলো
৬. রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান
৭. ফাইটোক্যামিকেল ( রোসমারিনিক অ্যাসিড,লিউটিউলিন,মাইরেটিনাল, এপিজেনিন)
৮. স্যাপোনিন
৯. ত্রিতারপিনিন
১০. ফ্ল্যাবোনয়েডস
১০০ গ্রাম তুলসীতে –
শক্তি – ২৩ কিলো ক্যালরি
উপাদান |
ক্যালরির পরিমাণ |
পানি |
৯২.০৬ মিঃ গ্রাঃ |
ফ্যাট |
০.৬৪ মিঃ গ্রাঃ |
প্রোটিন |
৩.১৫ মিঃ গ্রাঃ |
প্রোটিন |
৩.১৫ মিঃ গ্রাঃ |
কার্বোহাইড্রেট |
২.৬৫ মিঃ গ্রাঃ |
ফাইবার |
১.৬০ মিঃ গ্রাঃ |
চিনি |
০.৩০ মিঃ গ্রাঃ |
জিংক |
০.৮১ মিঃ গ্রাঃ |
পটাশিয়াম |
২৯৫ মিঃ গ্রাঃ |
সোডিয়াম |
০৪ মিঃ গ্রাঃ |
ক্যালসিয়াম |
১৭৭ মিঃ গ্রাঃ |
লোহা / আয়রন |
৩.১৭ মিঃ গ্রাঃ |
ফসফরাস |
৫৬ মিঃ গ্রাঃ |
ম্যাগনেসিয়াম |
৬৪ মিঃ গ্রাঃ |
২৬৪ মাইক্রো গ্রাম |
|
ভিটামিন বি১ |
০.০৩৪ মিঃ গ্রাঃ |
ভিটামিন বি২ |
০.০৭৬ মিঃ গ্রাঃ |
ভিটামিন বি৩ |
০.৯০২ মিঃ গ্রাঃ |
ভিটামিন বি৬ |
০.১৫৫ মিঃ গ্রাঃ |
ভিটামিন বি৯ |
৬৮ মাইক্রো গ্রাম |
১৮ মিঃ গ্রাঃ |
|
০.৮০ মিঃ গ্রাঃ |
|
ভিটামিন কে |
৪১৮.৮০ মাইক্রো গ্রাম |
তুলসী পাতার উপকারিতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একটি করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া উচিত। আলো বাতাস সহজে প্রবেশ করতে পারে এমন জায়গায় একটি তুলসী গাছ লাগিয়ে রাখতে পারেন। ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে তুলসীর ব্যবহার ও উপকারিতা অপ্রতুল। এছাড়াও তুলসীর আরো কিছু উপকারিতা ও গুনাগুন রয়েছে।
১. ঠান্ডা কাশি নিরাময়ে : সর্দি, ঠান্ডা, কাশি নিরাময়ে তুলসী মহৌষধ। বাচ্চার ঠান্ডা লাগলে,আধ চা চামচ মধুর সাথে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।
কফ জমে গেলে, প্রতিদিন সকালে তুলসী, আদা দিয়ে চা বানিয়ে সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে কফের সমস্যা দূর হবে।
২. মাথা ব্যথা দূর করে : তুলসী চা মাথা ব্যথার জন্য বিশেষ উপকারী। তুলসী মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। তুলসীর বিশেষ উপাদানসমূহ মাংসপেশির খিচুনি রোধ করে।
৩.গলা ব্যথা ভালো করে : তুলসী পাতা ফুটিয়ে সেই পানি হালকা গরম থাকা অবস্থায় গড়গড়া করলে গলা ব্যথায় আরাম পাওয়া যাবে। মুখ ও গলার রোগ জীবানু মরে যায়, শ্লেষ্মা ও মুখের দূর্গন্ধ দূর হয়।
৪.মানসিক চাপ কমায় : কিছু কিছু দেশে তুলসীকে মানসিক চাপ মুক্ত করার ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তুলসীতে রয়েছে ভিটামিন সি, এন্টি – অক্সিডেন্ট, এন্টি – ইনফ্লেমেটরী উপাদান যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। তুলসীতে থাকা উপাদান গুলো নার্ভকে শান্ত করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
৫. রোগ প্রতিরোধ করে: তুলসী পাতায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধের অতুলনীয় ক্ষমতা। যেমন – এজমা, ফুসফুসের রোগ, ব্রংকাইটিস, জ্বর সহ আরো কিছু রোগ প্রতিরোধ করে। জ্বরের সময় তুলসী অনেক বেশি উপকারী। এলাচি সহ তুলসী পাতা ফোটানো পানি পান করলে নানা রকমের রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সার্জািরির পর বা কোনো ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে দ্রুত ঘা শুকিয়ে যায়। তুলসীতে থাকা এন্টি–অক্সিডেন্ট ও এন্টি – ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের ভেতর থাকা নানা রকমের বিষক্রিয়া পদার্থ বের করে আনতে সহায়তা করে। ফলে বডি হাইড্রেটেড থাকে এবং কিডনির কার্যকারিতা সচল থাকে। কিডনিতে পাথর হওয়া হওয়ার সম্ভাবনা ও অনেকাংশে কমে আসে। সকাল বেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে মুখের রুচি বাড়ে। তুলসীর বীজ শুকিয়ে গুড়ো করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা দূর হয়।
৬.হার্টের জন্য উপকারী: তুলসী রক্তে জমাট বাধা হওয়া থেকে রক্ষা করে ও হার্ট এটাক হওয়া থেকে বাচায়। এছাড়াও হার্টের বানাবিধ সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে।
৭.পেটের সমস্যায় মহৌষধ : তুলসী পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য,অম্বল সহ পেটের আরো অনেক সমস্যা দূর করে। পেটের আলসার চিকিৎসায় ও তুলসীর ভূমিকা রয়েছে। পেট ব্যথা হলে ২০ মিলি পানিতে তুলসীর পাতা ফুটিয়ে পানি অর্ধেক কমিয়ে পান করুন। এই তুলসী ফুটানো পানি খেলে পেট ব্যথা ও এসিডিটি খুব সহজেই দূর হবে। তুলসী খিদে বাড়ায় কারণ এতে রয়েছে পাচক বৈশিষ্ট্য।
৮.ত্বকের যত্নে তুলসী : ত্বকের যত্নেও তুলসীর ব্যবহার করা যায়। তুলসীতে বিদ্যমান ভিটামিন সি, ফাইটোনিউট্রইয়েন্টস, এসেনসিয়াল অয়েলগুলো এন্টি অক্সিডেন্টের কাজ করে, এটি বয়সের ছাপ দূর করে। তুলসীকে যৌবন ধরে রাখার টনিক হিসেবেও ধরা হয়ে থাকে। তুলসী পাতা বাটা ত্বকে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে, ত্বকের জ্বালা পোড়া কমে। কোথাও পুড়ে গেলে তুলসীর রস ও নারকেল তেল মিশ্রিত করে লাগালে পোড়ার জ্বালা কমবে এবং দাগ ও পড়বে না।
৯. চোখের যত্নে তুলসী : তুলসীতে রয়েছে এন্টি – ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা চোখের চুলকারী, অঞ্জনি, গ্লুকোমা ( চোখের প্রেশার বাড়া) পিচুটি জমা সহ আরো কিছু সমস্যা দূর করে। তুলসী চোখের ছানি পড়া রোগ থেকে রেহাই দেয়। তুলসী ব্যবহারে দৃষ্টি শক্তিও বাড়ে। রাতে কয়েকটি তুলসী পাতা ভিজিয়ে রাখুন, সকালে সেই পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন। এতে করে চোখের অনেক সমস্যা দূর হবে। চোখের সংক্রমণ হতে রক্ষা করে।
১০. কানের যত্নে তুলসী: কানের ব্যথা ও কানের প্রদাহ সারাতে সহায়তা করে। তুলসী পাতা ও রসুনের রস থেকে তৈরি করা তুলসী তেল কানের প্রদাহ দূর করে। তীব্র ( Acute) ওটিটিস মিডিয়া হল কানের একটি রোগ যেখানে মধ্য কান ” হ্যামোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা ” নামক একটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়ে পারে। এক্ষেত্রে তুলসীর তেল অতি কার্যকরী।
১১. রক্তে সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় : তুলসী রক্তের সুগার ও কোলেস্টেরল কমায়, এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে। নিয়মিত তুলসী খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ পরিমাণ কমে। তুলসী রক্তের ইনসুলিন এর কার্যক্ষমতা বাড়ায়। যকৃতের ( লিভার) কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তুলসীতে থাকা স্যাপোনিন, ত্রিতারপিনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েডস ডায়বেটিস রোধে অতি কার্যকরী।
১২. টিউমার এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: শরীরের অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধিকে টিউমার বলে, এর থেকে পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে পারে। ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধের তুলসী অতি উপকারি। তুলসী পাতায় আছে রেডিওপ্রটেকটিভ (Radioprotective) উপাদান, যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সক্ষম। তুলসী পাতায় উপস্থির ফাইটোকেমিক্যাল যেমন, রোসমারিনিক অ্যাসিড,লিউটিউলিন,মাইরেটিনাল এবং এপিজেনিন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। অগ্ন্যাশয়ের টিউমার দূর করতেও তুলসী উপকারী। তুলসী ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধেও তুলসীর ভুমিকা দেখা গেছে।
১৩. চর্মরোগ সারায় : তুলসী ও দূর্বাঘাসের ডগা একসাথে বেটে রোগাক্রান্ত স্থানে লাগালে চর্মরোগ দূর হয়। কোনো ধরনের ঘা থাকলে ফিটকিরি ও তুলসী পাতা একসাথে পিষে লাগালে সেই ঘা দ্রুত ভালো হয়। তুলসী পাতা সরিয়াসিস, কুষ্ঠরোগ এর মত রোগ ও সারাতে সক্ষম।
১৪. মৌখিক ( Oral) স্বাস্থ্যের জন্য: মুখের দূর্গন্ধ দূর করার পাশাপাশি দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, দাঁতের ব্যথা কমায়। তুলসীর পাতা রোদে শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে তা দাঁতের মাজন হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ” জিঞ্জিভাইটিস” খুবই সাধারণ একটি মাড়ির সমস্যা এর কারণে মাড়ি ফুলে উঠে।। তুলসীর পাউডার দিয়ে মাড়ি মালিশ করলে এই রোগ প্রতিরোদ করা যায়।
১৫. চুলের যত্নে তুলসী: আমরা চুল পড়া, চুলে পেকে যাওয়া সহ আরো নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি। তুলসীর এন্টি অক্সিডেন্ট চুল পড়া, টাক পড়া সহ আরো কিছু সমস্যার সমধান করে। এছাড়াও এটি ইউভি (UV) রশ্নি ও দূষণ থেকে বাচায়।
১৬. পুরুষের বীর্য বৃদ্ধি পায় : তুলসীর বীজে প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে। দুই চামচ তুলসীর বীজে এক টুকরা পনিরের সমপরিমাণ ক্যালরি রয়েছে। তুলসীর বীজ দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে পুরুষ দেহে বীর্যের পরিমাণ বাড়ে।।
১৭. মাসিক পিরিয়ডের সমস্যা সমাধান করে: অনেকের দীর্ঘদিন যাবত পিরিয়ড হয়, সহজে রক্তপাত থামে না। তুলসীর শিকড় গূড়া করে সাদা পানের সাথে খেলে এই সমস্যার সমধান পাওয়া যায়।
তুলসী পাতার উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আগ্রহ থাকলে উপরের ভিডিওটি দেখতে পারেন।
🚫অপকারিতা🚫
সব ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ বা উপাদানের ই কিছু না কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তুলসীর ক্ষেত্রেও তাই। এই পর্যায়ে আমরা জেনে নিব তুলসীর কিছু অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া –
১. কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতি তুলসী গ্রহন করলে নারীদের বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে। আর গর্ভাবস্থা যেহেতু একটি বিশেষ অবস্থা, অনেক সময় তুলসী জরায়ুর সংকোচন ঘটায়।এই সময়ে কোনো কিছুই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা উচিত নয়।
২. মাত্রারিক্ত তুলসীর ব্যবহার স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয়, এতে করে স্বাভাবিক রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়ায় ব্যঘাত ঘটতে পারে। কোনো অপারেশন বা সার্জারির দুই সপ্তাহ আগে থেকে তুলসী পাতা খাওয়া বন্ধ করে দেয়া উত্তম।
৩. যাদের নিম্ন রক্তচাপ ( Low Blood Pressure) রয়েছে, তাদের জন্য তুলসী না খাওয়াই উত্তম৷ কারণ তুলসীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, পটাশিয়াম এর ফল রক্তচাপ আরো কমে যেতে পারে।
৪.অতিরিক্ত পরিমাণে তুলসী খাওয়া হলে বমিভাব মুখ ও গলা জ্বলা, ঝিমুনি দেখা দিতে পারে।
রিলেটেডঃ মেথির উপকারিতা ও মেথির অপকারিতা
শেষ কথা
তুলসী পরিমান ও নিয়মমাফিক ব্যবহার করলে এর সর্বোচ্চ উপকার গ্রহণ করা সম্ভব। শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী, অসুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে তুলসী ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ভেষজ কোনো উপাদান ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
বিঃদ্রঃ এই ব্লগের প্রত্যেকটা ব্লগ পোস্ট Sylhetism ব্লগের নিজস্ব ডিজিটাল সম্পদ। কেউ ব্লগের কোন পোস্ট কিংবা আংশিক অংশ ব্লগের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কপি পেস্ট করে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার অধিকার রাখে। এবং অবশ্যই কপিরাইট ক্লাইম করে যে মাধ্যমে এই ব্লগের পোস্ট প্রকাশ করা হবে সেখানেও কমপ্লেইন করা হবে।
এই ব্লগের কোন লেখায় তথ্যগত কোন ভুল থাকলে আমাদের Contact পেইজে সরাসরি যোগাযোগ করুন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তথ্য যাচাই করে লেখা আপডেট করে দিবো।
এই ব্লগের কোন স্বাস্থ বিষয়ক পোস্টের পরামর্শ নিজের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের মতামত নিবেন, আমরা স্বাস্থ বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ না, আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ হচ্ছে সঠিক তথ্য পরিবেশন করা। সুতারাং কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার অবশ্যই আমরা নিবো না।
ধন্যবাদ, ব্লগ কর্তৃপক্ষ।