ভিটামিন ই জাতীয় খাবার মানব জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। এটি মাত্রাতিরিক্ত যেমন শরীলের জন্য ক্ষতিকর তেমনি কম পরিমান খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । ভিটামিন ই এর অভাবে পেশি ও স্নায়ুর দুর্বলতা দেখা যায়। ছোট-বড় সবার ক্ষেত্রে কমবেশি দেখা যায় পেশির সমস্যা। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ই জাতীয় খাবার রাখা। প্রাপ্ত বয়স্কদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন ১৫ গ্রাঃ ভিটামিন ই থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন আধুনিক চিকিৎসকরা। তা হলে আমাদের পরিবারের সকল সদস্যদের ভিটামিন ই এর ঘাটতি হবে না। ভিটামিন ই আমাদের ত্বকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন ই তে ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন এবং শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা রোগ প্রতিরোধসহ বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরকে সাহায্য করে।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই হচ্ছে এক ধরনের চর্বিযুক্ত ভিটামিন, ৮টি যৌগের সমন্বয়ে এই ভিটামিন গঠিত, যার মধ্যে “alpha-tocopherol” আলফা-টোকোফেরলই আমাদের শরীর ব্যাবহার হয়ে থাকে। এর মধ্যে আরো রয়েছে “অ্যান্টি অক্সিডেন্ট” যা ফ্রি রেডিক্যাল (Free Radical) থেকে আমাদের রক্ষে করে ।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
ভিটামিন ই জাতীয় খাবার
আপনি যদি একটি সুন্দর, মসৃণ এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ই জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ভিটামিন ই জাতীয় খাবার শুধু আপনার ত্বককে সুস্থ রাখবে না, চুলের জন্যও এই ভিটামিন খুব উপকারি। ভিটামিন ই হচ্ছে একটি চর্বিযুক্ত ভিটামিন। ভিটামিন ই তেল,মাংস,মুরগি,ডিম এবং বিভিন্ন প্রকারের ফল ,শাক-সবজিতে রয়েছে। ভিটামিন ই শরীরের অনেক অঙ্গের সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক ভিটামিন ই জাতীয় খাবার কোনগুলা, ও কোন খাবারে কতটুকু ভিটামিন ই থাকে।
নাম |
পরিমান |
গম থেকে পাওয়া তেল |
১৪৯ মিঃ গ্রাঃ |
সূর্যমুখীর বীজ |
৩৫ মিঃ গ্রাঃ |
কাজু বাদাম |
২৬ মিঃ গ্রাঃ |
সূর্যমূখীর ফুলের তেল |
৪১ মিঃ গ্রাঃ |
বাদাম থেকে পাওয়া তেল |
৩৯ মিঃ গ্রাঃ |
পাইন বাদাম |
৩.৯ মিঃ গ্রাঃ |
রাজ হাঁসের মাংস |
১.৭ মিঃ গ্রাঃ |
চিনা বাদাম |
৮.৩ মিঃ গ্রাঃ |
অ্যাভোকাডো |
২.১ মিঃ গ্রাঃ |
ক্যাপসিকাম |
১.২ মিঃ গ্রাঃ |
আম |
০.৯ মিঃ গ্রাঃ |
শালগমের শাক |
২.৯ মিঃ গ্রাঃ |
কিউই ফল |
১.৫ মিঃ গ্রা; |
কুমড়ো বীজ |
২.২ মিঃ গ্রাঃ |
কালো জাম |
১.২ মিঃ গ্রাঃ |
জলপাই (আচার) |
৩.৮ মিঃ গ্রাঃ |
স্ট্রবেরি |
০.৯ মিঃ গ্রাঃ |
বীট শাক |
১.৮ মিঃ গ্রাঃ |
ব্রকলি |
১.৫ মিঃ গ্রাঃ |
সরিষা সবুজ শাক |
১.৮ মিঃ গ্রাঃ |
চিংড়ি |
২.২ মিঃ গ্রাঃ |

ভিটামিন ই এর উপকারিতা
আমারা আগেই আলোচনা করেছি ভিটামিন ই মানব শরীরের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়, তারপরেও দেখে নেই ভিটামিন ই কি কি সুবিধা দিয়ে থাকে।
- ভিটামিন ই আমাদের শরীরের ইমিউনিটি কে বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা করে, এবং লিভার ও কিডনির সুস্থতা দেখভালো করে।
- ভিটামিন ই জাতীয় লোশন ব্যবহারের আপনার চুল ও ত্বকে সুন্দর আভা বাড়াবে । ভিটামিন ই জাতীয় লোশন চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে থাকে।
- এটি নতুন কোষের সূচনা করে এবং কোষের উৎপাদন গতিশীল ও সচল রাখে ।
- ভিটামিন ই গর্ভাবস্থায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশু ও শিশুদের বিকাশের জন্য বড় ভূমিকা পালন করে। এটি গর্ভাবস্থায় জটিলতা মুক্ত করে।
- ভিটামিন ই মস্তিষ্ক বিকাশে ভুমিকা পালন করে। তাই চিকিৎসক খাদ্য তালিকাতে ভিটামিন ই জাতীয় খাবার রাখতে ও ভিটামিন ই জাতীয় ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
- ভিটামিন ই রক্ত জমাট বাধাঁর ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। শরীরের বিভিন্ন পেশি টিস্যু কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
- সিল্কি চুলের জন্য ভিটামিন ই অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
- এই ভিটামিন শুকনো ত্বকের চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। যদিও এটি দাদ জাতীয় চুলকানি সাড়াতে তেমন একটা কার্যকারী না তবে, শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা বজায় রাখতে দারুণ কার্যকারী।
- একটি গবেষণায় দেখা গেছে এই ভিটামিন একজিমার মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- নখের হলদেটে ভাব দূর করতে ভিটামিন এ জাতীয় খাবার কার্যকারী বলেই গবেষণায় দেখা গেছে।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন এ জাতীয় খাবার
ভিটামিন “ই” যতটুকু দরকার
আগেই বলা হয়েছে একজন পূর্ণ বয়সের মানুষে প্রতিদিন ১৫ মিঃ গ্রাম ভিটামিন দরকার, এখন দেখে নেওয়া যাক, বিভিন্ন বয়সের মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতে কত মিঃ গ্রাম ভিটামিন দরকার।
বয়স |
মিঃ গ্রাঃ |
০০-০৬ মাস |
৪ মিঃ গ্রাঃ |
০৭-১২ মাস |
৫ মিঃ গ্রাঃ |
০১-০৩ বছর |
৬ মিঃ গ্রাঃ |
০৪-০৮ বছর |
৭ মিঃ গ্রাঃ |
০৯-১৩ বছর |
১১ মিঃ গ্রাঃ |
১৪ বছরের বেশি |
১৫ মিঃ গ্রাঃ |
রূপচর্চায় ভিটামিন ই (Vitamin E) ক্যাপসুলের সঠিক ব্যবহার জেনে নিন। ত্বক ও চুল ভালো থাকবে
ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ভিটামিন ই ক্যাপসুল হল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ একটি ক্যাপসুল। সাধারণত শরীরের ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণ করতেই এই ক্যাপসুলটি ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। যাদের শরীরের ভিটামিন ই এর কোন ঘাটতি নেই তাদের এই ক্যাপসুলের কোন দরকার পরেনা। বাংলাদেশের বাজারে অনেক ধরনের ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়, যেমনঃ
নাম |
শক্তি |
কম্পানি |
দাম- প্রতিটা |
Alfa-E |
২০০ মিঃ গ্রাঃ |
Aristopharma Ltd. |
৫ টাকা |
Biovit-E |
২০০ মিঃ গ্রাঃ |
Biopharma Laboratories Ltd. |
৩ টাকা ২ পয়সা |
Cpvit E |
২০০ মিঃ গ্রাঃ |
Cosmo Pharma Ltd. |
২ টাকা |
Ecovit |
৪০০ মিঃ গ্রাঃ |
Globe Pharmaceuticals Ltd. |
৬ টাকা |
Lifil-E |
২০০ মিঃ গ্রাঃ |
ACME Laboratories Ltd. |
৪ টাকা |
এছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভিটামিন এ ক্যাপসুল বাংলাদেশে পাওয়া যায়, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এইসব ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল খাওয়া উচিত না, তখন হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।
ত এই ছিলো আজকের লেখা ভিটামিন ই জাতীয় খাবার, যদি আপনাদের এই আর্টিকেল ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
বিঃদ্রঃ এই ব্লগের প্রত্যেকটা ব্লগ পোস্ট Sylhetism ব্লগের নিজস্ব ডিজিটাল সম্পদ। কেউ ব্লগের কোন পোস্ট কিংবা আংশিক অংশ ব্লগের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কপি পেস্ট করে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার অধিকার রাখে। এবং অবশ্যই কপিরাইট ক্লাইম করে যে মাধ্যমে এই ব্লগের পোস্ট প্রকাশ করা হবে সেখানেও কমপ্লেইন করা হবে।
এই ব্লগের কোন লেখায় তথ্যগত কোন ভুল থাকলে আমাদের Contact পেইজে সরাসরি যোগাযোগ করুন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তথ্য যাচাই করে লেখা আপডেট করে দিবো।
এই ব্লগের কোন স্বাস্থ বিষয়ক পোস্টের পরামর্শ নিজের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের মতামত নিবেন, আমরা স্বাস্থ বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ না, আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ হচ্ছে সঠিক তথ্য পরিবেশন করা। সুতারাং কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার অবশ্যই আমরা নিবো না।
ধন্যবাদ, ব্লগ কর্তৃপক্ষ।