তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ কি কি? জানুন বিস্তারিত | ২০২৪

মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ_মাসিক

Last Updated on 7th April 2024 by Mijanur Rahman

৪০ থেকে ৪৫ বছরের আগে মাসিক বন্ধ হওয়া মোটেও স্বাভাবিক বিষয় নয়। এরকম অনিয়মিত মাসিক কখনো কখনো বয়ে নিয়ে আসে চরম ভোগান্তি ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুঃসংবাদ। তাই আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে খুশি হওয়ার বদলে মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ গুলো খুঁজুন। চলুন অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ, এর লক্ষণ এবং হঠাৎ পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে করনীয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

অনিয়মিত মাসিক কি?

মেয়েদের ১২ থেকে ৪৫ বছর সময় হচ্ছে প্রজনন কাল। এসময় একজন নারীর দেহে প্রতিমাসে পরিপক্ক ডিম্বানু তৈরি হয়। কিন্তু এই ডিম্বাণু যদি শুক্রাণুর সংস্পর্শে না আসে, তবে তা জরায়ুর কিছু অংশ ও রক্তের সাথে মিশে যোনিপথে দিয়ে বের হয়ে আসে। প্রতি ২৮ দিন অন্তর অন্তর এই রজোচক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে। নিয়মিত মাসিক বা পিরিয়ড হওয়া স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।

কিন্তু কখনো কখনো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা প্রজনন অঙ্গের কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে এই স্বাভাবিক চক্রের ব্যাঘাত ঘটে। যা আসলেই চিন্তার কারণ। যদি একজন মেয়ে ১৬ বছর এবং একজন নারী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্য পিরিয়ড না হোন, তবে তা অবশ্যই অনিয়িমিত মাসিকের মধ্য পড়ে।

হঠাৎ মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা অনিয়মিত মাসিককে অ্যামেনোরিয়াও বলা হয়। এই মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বের করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

আপনার মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত কিনা তা কি করে বুঝবেন?

স্বাভাবিক পিরিয়ডে অস্বাভাবিকতা বা অনিয়ম দেখা দিলে আপনার পরবর্তী পিরিয়ডে এর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এসব পরিবর্তন দেখেই আপনি আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বের করতে পারবেন।

সময়কাল
আপনার পিরিয়ড একটা দীর্ঘ সময় পর পর হচ্ছে কিনা।
প্রবাহ
আপনার পিরিয়ডের প্রবাহ ট্র্যাক করুন এবং এটি স্বাভাবিকের চেয়ে ভারী বা হালকা কিনা তা দেখুন। আপনি কত ঘন ঘন স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করছেন তাও খেয়াল রাখুন।
রক্তপাত
আপনার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি রক্তপাত হচ্ছে?
ব্যাথা
আপনি কি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ব্যথা অনুভব করছেন? বা কম? আপনি সাধারণত যেরকম ব্যথা থাকে তার চেয়ে ভিন্ন?
অন্যান্য কারণ
আপনি কি অন্য কোন পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছেন? আপনার পিরিয়ডের সময় কি মেজাজ পরিবর্তন হয়?

অনিয়মিত মাসিকের ধরন

আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কার প্রধানত দুই ধরনের মাসিক দেখা দেয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক অ্যামেনোরিয়া।

প্রাথমিক অ্যামেনোরিয়া: প্রাথমিক অ্যামেনিয়া হল যখন একজন কিশোরী মেয়ে ১৬ বছর বয়সে পৌঁছেছে বা পেরিয়ে গেছে এবং এখনও তার প্রথম মাসিক হয়নি। বেশিরভাগ মেয়েদের ৯ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে মাসিক শুরু হয়, কিন্তু এর গড় বয়স ১২ বছর। অর্থাৎ এসময় যে মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হয়ে থাকে তাকে প্রাথমিক অ্যামেনোরিয়া বলে।

সেকেন্ডারি অ্যামেনোরিয়া হল যখন একজন মহিলা কমপক্ষে টানা তিন মাস ধরে মাসিক না হোন। এটি অ্যামেনোরিয়ার আরও সাধারণ রূপ। মনোপজের আগে বেশিরভাগ সেকেন্ডারি অ্যামনোরিয়া দেখা দেয়।

# পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার লক্ষণ

অনিয়মিত মাসিক, তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ বা মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণে আপনার কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। এ লক্ষণ গুলো মোটেও অবহেলা করার মতো না। যখনই কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখবেন, ধরে নিবেন আপনার শরীর তার স্বাভাবিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। যেমন:

  • দুধের স্তনে স্রাব
  • চুল পরা
  • মাথাব্যথা
  • দৃষ্টি পরিবর্তন হয়
  • মুখের অতিরিক্ত চুল
  • পেলভিক ব্যথা
  • ব্রণ
  • মাসিক চক্রের দৈর্ঘ্য ৩৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে প্রসারিত হয়
  • একটানা ৩টির বেশি মাসিক চক্র অনুপস্থিত
  • জমাট বা দাগ সহ ভারী রক্তপাত
  • পেটে ব্যথা এবং পিঠে ব্যথা

# তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ

তারিখ অনুযায়ী মাসিক না হওয়ার কারণ অনেক, কখনো এটি স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন, কখনো শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, আবার কখনো কোনো জটিল রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। যখন একজন ব্যক্তির নিয়মিত মাসিক রক্তপাত হয়, এর মানে হল ডিম্বাশয়, জরায়ু, হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি ভালভাবে কাজ করছে।

ঋতুস্রাবের অনুপস্থিতি শরীরের এই অংশগুলির একটিতে সমস্যা নির্দেশ করতে পারে, বা যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিকতা থাকতে পারে। চলুন মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ গুলো ভালোভাবে জেনে নেই।

মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ

১. গর্ভাবস্থা

আপনি যৌন সম্পর্কে সক্রিয় থাকেন, তবে আপনার মাসিক বন্ধ হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। এ নিয়ে চিন্তার কারণ নেই। আপনার জন্য নিসন্দেহে খুশির সংবাদ অপেক্ষা করছে। যদি সব ঠিকঠাক থাকে, এটা নিশ্চিত আপনি প্র্যাগনেন্ট

গর্ভাবস্থার কারণে পিরিয়ড অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আপনি গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা নেওয়ার পরও আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২. মানসিক চাপ

মানসিক চাপ আপনার শরীরের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। আমাদের শরীর চালানোর যে হরমোনগুলো তা মানসিক চাপের কারণে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। ফলে শরীরে নানা রকম পরিবর্তন দেখা যায়। আপনি যদি মানসিক চাপে থাকেন, আপনার মাসিক চক্র দীর্ঘ বা ছোট হতে পারে। কখনো কখনো আপনার মাসিক সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে, অথবা আরো বেদনাদায়ক হয়ে উঠতে পারে।

তাই যথাসম্ভব মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত ব্যায়াম, যেমন দৌড়ানো, সাঁতার কাটা এবং যোগব্যায়াম আপনার মানসিক চাপ শিথিল করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি স্ট্রেসের সাথে মানিয়ে নিতে না পারেন তবে জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি (সিবিটি) গ্রহণ করতে পারেন। CBT হল একটি মনস্বাত্তিক থেরাপি যা আপনার চিন্তাভাবনা এবং কাজ করার পদ্ধতি পরিবর্তন করে আপনার সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারে।

৩. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া

অত্যধিক বা হঠাৎ ওজন হ্রাস কখনো কখনো হতে পারে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ। আপনি যে পরিমাণ ক্যালোরি খান তা ডিম্বস্ফোটনের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়।

আপনার ওজন কম বা আপনার বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ১৮.৫ এর কম হলে আপনাকে অবশ্যই একজন ডায়েটেশিয়ানের শরনাপন্ন হতে হবে। একজন ডায়েটিশিয়ান কীভাবে নিরাপদে ওজন পুনরুদ্ধার করবেন সে সম্পর্কে আপনাকে পরামর্শ দিতে পারবেন।

৪. মাত্রাতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি

অতিরিক্ত ওজন আপনার মাসিক চক্রকেও প্রভাবিত করতে পারে। আপনার ওজন বেশি হলে, আপনার শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে ইস্ট্রোজেন তৈরি করতে পারে, যা মহিলাদের মধ্যে প্রজনন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলির মধ্যে একটি।

অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন আপনার নিয়মিত পিরিয়ড হওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, এমনকি আপনার পিরিয়ড বন্ধ করে দিতে পারে। তাই আপনার মাসিক চক্র ঠিক রাখার জন্য হলেও আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

৫. খুব বেশি ব্যায়াম করা

তীব্র শারীরিক কার্যকলাপ আপনার শরীরের উপর বেশ চাপ দেয় যা আপনার পিরিয়ডের জন্য দায়ী হরমোনগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে। তীব্র ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের অত্যধিক চর্বি কমানোর পাশাপাশি আপনার ডিম্বস্ফোটন বন্ধ করতে পারে।

যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম আপনার পিরিয়ড বন্ধ করে দেয় তাহলে আপনাকে আপনার কার্যকলাপের মাত্রা কমানোর পরামর্শ দেওয়া হবে।আপনি যদি একজন পেশাদার ক্রীড়াবিদ হন, তাহলে আপনি ক্রীড়া মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৬. জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল

আপনি যদি ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণ করেন তবে আপনি প্রায়ই একটি পিরিয়ড মিস করতে পারেন। এটি স্বাভাবিক, উদ্বেগের কোনো কারণ নয়। কিছু কিছু গর্ভনিরোধক, যেমন প্রোজেস্টোজেন অনলি পিল (পিওপি), গর্ভনিরোধক ইনজেকশন এবং অন্তঃসত্ত্বা সিস্টেম (আইইউএস), বিশেষ করে মিরেনা, পিরিয়ড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে পারে। যাইহোক, আপনি যখন এই ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার করেন, তবে আপনার পিরিয়ড বন্ধ হতে পারে।

৭. মেনোপজ

আপনার বয়স ৪৫ থেকে ৫৫ বছরের নিকটতর হবে, আপনার মনোপজ হওয়ার সম্ভাবনা ততই বেড়ে যাবে। আর মনোপজ হলে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে এবং ডিম্বস্ফোটন কম হয়। মেনোপজের পর আপনার পিরিয়ড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

যাইহোক, ১০০ জনের মধ্যে ১ জন মহিলা ৪০ বছর বয়সের আগেই মেনোপজের মধ্য দিয়ে যায়। এটি অকাল মেনোপজ বা অকাল ওভারিয়ান ফেইলওির নামে পরিচিত।

৮. পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS)

পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার প্রথম তিনটি কারণের মধ্য এটি অন্যতম। পলিসিস্টিক ডিম্বাশয়ে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিকারক ফলিকল থাকে, যা অনুন্নত থলি যেখানে ডিম বিকাশ হয়। আপনার যদি PCOS থাকে তবে এই থলিতে ডিম্বস্ফোটন ঘটে না।

PCOS খুব সাধারণ বলে মনে করা হয়, যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন মহিলা এ রোগে ভোগেন।

৯. পুষ্টির ঘাটতি

অপুষ্টি বা ভগ্নস্বাস্থ্য আপনার শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করতে পারে। এই অবস্থা আপনার মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে, যা অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে।

১০. মানসিক স্বাস্থ্যের ওষুধ

কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং মেজাজ স্টেবিলাইজার ঔষধ আপনার মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি কীভাবে কাজ করে তা প্রভাবিত করতে পারে। যদি সঠিক মাত্রায় হরমোন তৈরি না হয়, ফলে তারিখ অনুযায়ী মাসিক না ও হতে পারে। তাই আপনি যদি কোন প্রকার মানসিক স্বাস্থ্যের ওষুধ সেবন করে থাকেন তাহলে এটি হতে পারে মাসিক না হওয়ার একটি কারণ।

১১. টার্নার সিন্ড্রোম

টার্নার সিনড্রোম একটি জেনেটিক ব্যাধি। এই অবস্থায় মহিলাদের অনুন্নত ডিম্বাশয় দেখা যায়। যার ফলে মাসিক অনিয়মিত বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

১২. যৌনাঙ্গে ত্রুটি

মহিলাদের যৌনাঙ্গের ত্রুটি হল একটি অসম্পূর্ণ হাইমেন, যে হাইমেনের মুখ খোলা নেই ফলে তা যোনিপথ বন্ধ করে দেয় এবং পিরিয়ডের সময় রক্ত ​​বের হতে দেয় না। মূলত এতে কারো হাত নেই, এটি প্রজনন অঙ্গের সম্পূর্ণ কাঠামোগত ত্রুটি।

১৩. পিটুইটারি গ্রন্থির সমস্যা

পিটুইটারি গ্রন্থি হরমোন নিঃসরণ করে যা মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে পিটুইটারি গ্রন্থির যেকোন সমস্যা আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে। যেমন:

  •  পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার
  • প্রসবোত্তর নেক্রোসিস, যা গর্ভাবস্থার পরে পিটুইটারি গ্রন্থির কোষের অকাল মৃত্যু
  • sarcoidosis, যা একটি প্রদাহজনক অবস্থা
  • রেডিয়েশন থেরাপি পিটুইটারি গ্রন্থির কোষগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে যার ফলে মাসিক বন্ধ হতে পারে।

১৪. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা

আপনার মাসিক চক্রের মূল হোতাই হচ্ছে হরমোন। এই হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণেও আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সাধারণত পিটুইটারি গ্রন্থি বা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন আপনার মাসিক চক্র সচল রাখতে সাহায্য করে। কম ইস্ট্রোজেন মাত্রা বা উচ্চ টেসটোসটের মাত্রাও আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে।

কখন ডাক্তারকে কল করবেন?

মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হলে কখন আপনার একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত তা আপনি জানেন কি? চলুন তা জেনে নেই –

  • আপনি বছরে আপনার তিন বা তার বেশি পিরিয়ড মিস করেছেন
  • নিয়মিত পিরিয়ড ২১ দিনের চেয়ে বেশি দিন পর পর হয়।
  • পিরিয়ড ৩৫ দিনের মধ্যেও নিয়মিত না হওয়া
  • আপনি যদি আপনার পিরিয়ডের সময়। অস্বাভাবিকভাবে চেয়ে বেশি পরিমাণে রক্তপাত হয়।
  • যদি পিরিয়ডের রক্তপাত সাত দিনের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে।
  • যদি আপনার পিরিয়ডের সময় তীব্র ব্যথা হয় বা বেশিক্ষণ ধরে ব্যাথা থাকে।

ডাক্তার কীভাবে চেকআপ বা পরিক্ষা করবেন?

আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বের করতে আপনি যখন ডাক্তারের শরনাপন্ন হবেন, ডাক্তার আপনাকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করবেন। এই প্রশ্নগুলো হতে পারে আপনার স্বাভাবিক মাসিক চক্র, আপনার জীবনধারা এবং আপনি যে অন্য উপসর্গগুলি অনুভব করছেন সে সম্পর্কিত। এছাড়া ডাক্তার আপনাকে কিছু ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা দিতে পারে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

  • রক্ত পরীক্ষা: রক্ত পরিক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার আপনার শরীরে হরমোনের মাত্রা যাচাই করবেন। প্রোল্যাকটিন , লুটেইনাইজিং হরমোন এবং ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন সবই মাসিকের সাথে সম্পর্কিত। এই মাত্রাগুলো আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বা অনিয়মিত হওয়ার কারণ নির্ধারণ করবেন।
  • আল্ট্রাসাউন্ড : আল্ট্রাসাউন্ড হল একটি ইমেজিং পরীক্ষা যা উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে আপনার শরীরের ভিতরের বিশদ ছবি তৈরি করে। এটি আপনার ডাক্তারকে বিভিন্ন অঙ্গ আরো সূক্ষভাবে দেখতে সাহায্য করে, যেমন ডিম্বাশয় এবং জরায়ু।
  • সিটি স্ক্যান : সিটি স্ক্যান হল অন্য ধরনের ইমেজিং পরীক্ষা যা শরীরের ক্রস-বিভাগীয় ছবি তৈরি করতে কম্পিউটার এবং ঘূর্ণায়মান এক্স-রে মেশিন ব্যবহার করে। এই চিত্রগুলি আপনার ডাক্তারকে আপনার গ্রন্থি এবং অঙ্গগুলি এবং টিউমারগুলির অবস্থান দেখতে সাহায্য করে।

মাসিক বন্ধ হওয়ার জটিলতা

মাসিক বন্ধ হওয়া মোটেও কোনো স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এটি আপনার শরীরে অনেক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই মাসিক বন্ধ হলে খুশি না হয়ে ডাক্তারের কাছে যান। মাসিক বন্ধ হওয়ার ফলে সৃষ্ট জটিলতাগুলো এর মধ্যে রয়েছে:

  • বন্ধ্যাত্ব এবং গর্ভাবস্থার সমস্যা: যদি আপনার ডিম্বস্ফোটন না হয় বা মাসিক না হয়, তাহলে আপনি গর্ভবতী হতে পারবেন না। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার ফলে মাসিক বন্ধ হলে তা গর্ভপাত বা গর্ভাবস্থার সাথে অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
  • মনস্তাত্ত্বিক চাপ: আপনার সমবয়সীদের যখন পিরিয়ড হচ্ছে তখন তাদের মাসিক না হওয়াটা অনেকখানি চিন্তার বিষয়, তাই নয় কি! বিশেষ করে তরুণীদের জন্য এটা বেশ মানসিক চাপের সৃষ্টি করে।
  • অস্টিওপোরোসিস এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ: পর্যাপ্ত ইস্ট্রোজেন না থাকার কারণে এই দুটি সমস্যা হতে পারে। অস্টিওপোরোসিস হল হাড়ের দুর্বলতা। কার্ডিওভাসকুলার রোগের মধ্যে রয়েছে হার্ট অ্যাটাক এবং রক্তনালী এবং হৃদপিণ্ডের পেশীর সমস্যা।
  • পেলভিক ব্যথা: যদি একটি শারীরবৃত্তীয় সমস্যা যা নিয়মিত মাসিক না হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়। মূলত আপনার পেলভিক এলাকায় ব্যথার সূচনা হয়।

ডাক্তারের পরামর্শ

মাসিক বন্ধ হওয়া মোটেও স্বাভাবিক বিষয় নয়। মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে কখনো আপনার অতিরিক্ত ওজন, কখনো ভগ্নস্বাস্থ্য, কখনো হরমোনের ভারসাম্যহীন কাজ করে। দীর্ঘদিন মাসিক বন্ধ হওয়ার ফলাফল স্বরূপ নানা জটিল রোগ থেকে শুরু করে বন্ধ্যাত্বও হতে পারে। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে এ জটিল রোগগুলোর ঝুঁকি কমানো অনেকাংশেই সম্ভব।

  • একজন কম ওজনের ব্যক্তিকে ডাক্তার ওজন বাড়ানোর পরামর্শ দিবেন। কারণ ওজন হ্রাসের জন্য আপনার মাসিক চক্র পরিবর্তন হতে পারে।
  • স্স্ট্রেস আপনার মাসিক চক্র বন্ধ করার অন্যতম কারণ। তাই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার আপনাকে সবসময় স্ট্রেসমুক্ত থাকার পরামর্শ দিবেন। স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যোগব্যায়াম , মননশীলতা, ধ্যান, বা একজন থেরাপিস্টের শরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিবেন।
  • অতিরিক্ত শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন
  • এর মধ্যে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা।
  • তা ছাড়া শরীরে কোনো দুর্বলতা বা কোনো ঘাটতি যেন না থাকে তার জন্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
  • অতিরিক্ত তেল চর্বি বা মশলাদার খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা
  • দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যায়াম ও বিশ্রামের ভারসাম্য থাকতে হবে।

পিরিয়ড না হলে করনীয়

মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হওয়া পুরো ব্যাপারটাই কেমন লুকোচুরির মধ্যে থাকে। যেহেতু মেয়েলি সমস্যা, তাই প্রথমে তারা ঘরোয়াভাবে সমাধান করতে চায়। মাসিক নিয়মিত করার জন্য এই ঘরোয়া প্রতিকার গুলো সেই প্রাচীন কাল ধরে কার্যকর ফলাফল দিয়ে আসছে-

১. আদা চা

অনিয়মিত পিরিয়ড সহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে আদা বেশ উপকারী। কাঁচা আদা নিয়মিত সেবন করলে তা আপনার পিরিয়ড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। আদার মধ্যে রয়েছে জিঞ্জেরল যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি জরায়ুর পেশী সংকুচিত করতে সাহায্য করে এবং হরমোনের ভারসাম্যকে সহজ করে।

এটি পিরিয়ডের মাসিক ঘটনাকে অব্যাহত রাখে। সকালে বা সন্ধ্যায় খালি পেটে এক গ্লাস গরম আদা, খানিকটা লেবুর রস এবং এক চামচ মধু দিয়ে পান করলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে।

২.পাকা পেঁপে

পাকা পেঁপে অনিয়মিত পিরিয়ড নিরাময়ে বেশ সুপরিচিত। এটি আপনার জরায়ুর সংকোচন বাড়ায় যা আপনার মাসিকের নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে। কয়েক মাস নিয়মিত কাঁচা পেঁপের রস পান করুন, দেখবেন আপনার মাসিক আর বন্ধ হবে না। তবে আপনার মাসিক চলাকালীন সময় এটি পান করবেন না।

৩. গুড়

গুড় শুধু মিষ্টিই নয়, প্রচুর ঔষধি গুণসম্পন্নও। নিয়মিত গুড় খাওয়া অনিয়মিত পিরিয়ড স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। এটি জরায়ুর ক্র্যাম্প কমাতেও সাহায্য করে।

৪. হলুদ

হলুদ যেকোন রোগের মহাঔষধ। এটি একটি জাদুকরী ঘরোয়া প্রতিকার যা আমরা যেকোনো অবস্থায় ব্যবহার করতে পারি। নিয়মিত হলুদের গুড় খেলে আপনার অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত হবে। এটির অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-স্পাসমোডিক বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা জরায়ুর ক্র্যাম্প কমাতে সাহায্য করে। আপনি যদি স্বাভাবিকভাবে পিরিয়ড শুরু করতে চান, তাহলে গরম দুধ এবং মধুর সাথে হলুদ খাওয়ার চেষ্টা করুন। আপনার মাসিক না হওয়া পর্যন্ত এটি প্রতিদিন খেতে থাকেন।

৫. অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরার রস আপনার মাসিক নিয়ন্ত্রণ এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে একটি চমৎকার প্রতিকার। এটি আপনার বিপাককেও সাহায্য করে এবং আপনার অন্ত্রের সিস্টেমকে সুস্থ রাখে। অ্যালোভেরা আপনার হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করে। যার ফলে আপনার পিরিয়ড স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে পিরিয়ডের সময় অ্যালোভেরা ব্যবহার করবেন না। এটি জরায়ুর সংকোচন বাড়াতে পারে।

৬. আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে আক্রান্ত মহিলাদের পিরিয়ড এবং হরমোন নিয়মিত করতে সাহায্য করতে পারে। আপেল সিডার ভিনেগার আপনার ওজন এবং রক্তে শর্করা ও ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারেন। যেহেতু এটি তিতা স্বাদযুক্ত তাই এর সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

৭. দারুচিনি

দারুচিনি আমাদের রান্নাঘরের পাশাপাশি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অপরিহার্য উপাদান। এটি জরায়ুতে রক্ত ​​প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং অনিয়মিত পিরিয়ড নিরাময় করতে পারে। এটি পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমি ভাব কমাতে পারে।

সেরা ফলাফলের জন্য, এক গ্লাস দুধে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো যোগ করুন এবং এটি নিয়মিত পান করুন।

৮. বিটরুট

বীটরুট আপনার অনিয়মিত পিরিয়ড সমস্যা এবং এর লক্ষণগুলি মোকাবেলা করতে সাহায্য করতে পারে। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড এবং আয়রন রয়েছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি emmenagogue হিসাবে কাজ করে।

৯. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনিয়মিত পিরিয়ডের অন্যতম কারণ। ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অ্যালকোহল খাওয়া শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে যার কারণে অনিয়মিত মাসিক বা মাসিক বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। তাই আপনার মাসিক চক্র ঠিক রাখতে আপনার খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, শুকনো ফল, লাল মাংস, মাছ এবং সেই খাবারগুলো রাখুন যা আপনার নিত্যদিনের পুষ্টি নিশ্চিত করবে।

১০. নিয়মিত ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়ামের অনেক উপকারিতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এটি পিরিয়ড নিয়মিত করতে সহায়তা করে। এটি আপনার ওজন বজায় রাখতে এবং আপনার হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমে, একজন মহিলার অপ্রয়োজনীয় ওজন বৃদ্ধির জন্য হরমোনের ভারসাম্যহীনতার হয়। নিয়মিত ওয়ার্কআউট করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।

আপনার মন এবং শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে যোগব্যায়ামও উপকারী হয়েছে। এটি আপনার শরীর ও মনকে শান্ত রাখে। গবেষণা পরামর্শ দেয় যে যোগব্যায়াম মাসিকের ব্যথা এবং মাসিকের সাথে সম্পর্কিত মানসিক উপসর্গ যেমন বিষণ্নতা এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।

পরিশেষে

আপনার মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ অসংখ্য থাকতে পারে, তাই না? আপনার পক্ষে তা বের করা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি তা সঠিক নাও হতে পারে। তাই মাসিক ঠিক সময়ে না হলে লজ্জা না রেখে একজন গাইনী ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। সঠিক লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভাস আপনাকে মাসিকের নানা জটিলতা থেকে মুক্তি দিবে।

তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের লেখা পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার লক্ষণ, পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার কারণ ও হঠাৎ পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে করনীয় যাবতীয় সব সমাধান। লেখা সম্পর্কে যদি আপনাদের কারো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

আজকের মতো এখানেই বিদায়, দেখা হবে আগামী লেখাতে।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

অনিয়মিত মাসিক কি?

মেয়েদের ১২ থেকে ৪৫ বছর সময় হচ্ছে প্রজনন কাল। এসময় একজন নারীর দেহে প্রতিমাসে পরিপক্ক ডিম্বানু তৈরি হয়। কিন্তু এই ডিম্বাণু যদি শুক্রাণুর সংস্পর্শে না আসে, তবে তা জরায়ুর কিছু অংশ ও রক্তের সাথে মিশে যোনিপথে দিয়ে বের হয়ে আসে।

প্রতি ২৮ দিন অন্তর অন্তর এই রজোচক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে। নিয়মিত মাসিক বা পিরিয়ড হওয়া স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।

কিন্তু কখনো কখনো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা প্রজনন অঙ্গের কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে এই স্বাভাবিক চক্রের ব্যাঘাত ঘটে। যা আসলেই চিন্তার কারণ। যদি একজন মেয়ে ১৬ বছর এবং একজন নারী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্য পিরিয়ড না হোন, তবে তা অবশ্যই অনিয়িমিত মাসিকের মধ্য পড়ে।

হঠাৎ মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা অনিয়মিত মাসিককে অ্যামেনোরিয়াও বলা হয়। এই মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বের করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

ব্যায়াম কি অনিয়মিত পিরিয়ড নিরাময় করতে পারে?

হ্যাঁ, নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম অনিয়মিত পিরিয়ড নিরাময় করতে পারে। এটি শরীর ও মন উভয়ের জন্যই ভালো। যাইহোক, অতিরিক্ত ব্যায়াম পেশী ক্ষয় এবং ছিঁড়ে, হাড় এবং জয়েন্ট ক্ষতি, সেইসাথে হরমোন ভারসাম্যহীনতা হতে পারে।

তাই মাসিক চক্র নিয়মিত রাখতে সপ্তাহে ২.৫-৫ ঘন্টা ব্যায়াম করাই যথেষ্ট।

পিরিয়ড নিয়মিত করার জন্য ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত কিনা?

ভিটামিন ডি মহিলাদের জন্য অত্যাবশ্যক পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন ডি শরীরের সর্বোত্তম ডিম্বস্ফোটন প্রক্রিয়া বজায় রাখার সাথে জড়িত। তাই ডাক্তাররা পুষ্টির ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে, অনিয়মিত পিরিয়ড স্বাভাবিক করতে ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ কি?

মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ বহুল। কখনো এটি স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন, কখনো শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, আবার কখনো কোনো জটিল রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। যখন একজন ব্যক্তির নিয়মিত মাসিক রক্তপাত হয়, এর মানে হল ডিম্বাশয়, জরায়ু, হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি ভালভাবে কাজ করছে।

ঋতুস্রাবের অনুপস্থিতি শরীরের এই অংশগুলির একটিতে সমস্যা নির্দেশ করতে পারে, বা যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিকতা থাকতে পারে। 

Author

Scroll to Top