অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২২

অশ্বগন্ধার উপকারিতা

Last Updated on 15th October 2023 by Mijanur Rahman

অশ্বগন্ধার নাম  হয়ত  কম বেশি  অনেকেই শুনেছেন। অশ্বগন্ধার ব্যবহার ৬০০ খ্রিস্টাব্দের আগে থেকে শুরু হয়েছে। অশ্বগন্ধা খুবই উপকারী একটি গাছ। অশ্বগন্ধায় ফাইটোক্যামিকেল উপাদান থাকার কারণে এর এত গুনাগুন। অশ্বগন্ধার নির্যাসে ৩৫ রকমের ফাইটোক্যামিকেল র‍য়েছে বলা জানা গেছে। বন্য অশ্বগন্ধা তেল আহরণের জন্য সবচেয়ে ভালো। ওষুধি গুনাগুন সহ আরো বিভিন্ন কাজে এই গাছ ও গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অশ্বগন্ধার পাতা, ফল, বীজ, মূল সবই উপকারী। আজকের লেখায় অশ্বগন্ধার উপকারিতাঅশ্বগন্ধার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

অশ্বগন্ধা একটি ভেষজ উদ্ভিদ।  এই গাছের পাতা সিদ্ধ করলে ঘোড়ার মূত্রের ন্যায়  গন্ধ বের হয়,  তাই একে অশ্বগন্ধা বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম ( Withania somnifera ) উইথানিয়া সোমনিফেরা। আয়ুর্বেদে একে বলা হয় বলদা এবং বাজিকরি  বা শীতকালীন চেরি। এই পাতা আয়ুর্বেদ ওষধ শ্বাস্ত্রে ওষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

অশ্বগন্ধার গাছ
ফটোঃ অশ্বগন্ধার গাছ

বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস

চলুন দেখে নেওয়া যাক অশ্বগন্ধার বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাসঃ

জগৎ
Plantae
বিভাগ
Tracheophyta
শ্রেণী
Magnoliopsida
বর্গ
Solanales
পরিবার
Solanaceae
গণ
Withania
প্রজাতি
Withania somnifera
এর দ্বীপদি নাম
Withania somnifera ( L.) Dunal

উপাদান

অশ্বগন্ধায় যেসব উপাদান রয়েছে তা হলঃ

  •  অ্যালকালয়েড
  • স্ট্রেরয়ডাল ল্যাক্টনস
  •  ট্যানিনস
  • স্যাপোনিনস

অশ্বগন্ধা সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে –

  • ছোট্ট অশ্বগন্ধা
  • বড় অশ্বগন্ধা

ছোট অশ্বগন্ধার ঝোপ ছোট কিন্তু শিকড়গুলো বড় হয়ে থাকে। ভারতের রাজস্থানে এটি খুব বেশি পাওয়া যায়। বড় অশ্বগন্ধা এর কান্ড তুলনারমূলক বড় হলেও এর শিকড় ছোট এবং পাতলা হয়ে থাকে। এটি মাঠ বা বাগানে হয়ে থাকে।

অশ্বগন্ধা

এর পাতা, ফল, মূল, ফল, বাকল, ডাল সবই ওষুধ  হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর ফল মটরের মত ছোট হয়ে থাকে। ফুল দেখতে ছোট এবং কিছুটা ঘন্টা আকৃতির। নিচের ফটোতে তা লক্ষণীয়।

অশ্বগন্ধার ও তার ফল
ফটোঃ অশ্বগন্ধার ও তার ফল

অশ্বগন্ধা যেসব দেশে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হয়ে থাকে। ভারতের শুষ্ক অঞ্চলে অশ্বগন্ধা চাষ বেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও এটি চীন নেপাল ও ইয়েমেনেও পাওয়া যায়। সূর্যের আলোতে এবং আংশিক ছায়াযুক্ত স্থানে এটি হয়ে থাকে। অশ্বগন্ধার চাষের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো বসন্ত কাল।

পুষ্টিগত মান

প্রতি ১০০গ্রাম অশ্বগন্ধার গুঁড়া বা পাউডারে বিদ্যমান পুষ্টিগত মান হলঃ

উপাদান
ক্যালোরি
এনার্জি / শক্তি
২০০ কিলো ক্যালোরি
কার্বোহাইড্রেট
৭৫ গ্রাম
ফাইবার
৭৫ গ্রাম

অশ্বগন্ধার উপকারিতা

অশ্বগন্ধার স্বাস্থ্য উপকারিতা, ওষুধিগুণ অনেক, ভেষজ ওষুধ হিসাবে এটি প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক অশ্বগন্ধার উপকারিতা কি কি!

১. ভালো ঘুম হয়: ঘুমানোর আগে অশ্বগন্ধা গুড়োর সাথে চিনি মিশিয়ে খেলে ভালো ঘুম হয়। ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রায় ভুগলে অশ্বগন্ধা হতে পারে কার্যকরী ঔষধ।

২. শক্তিবর্ধক: অশ্বগন্ধা গাছের রসে শক্তিবর্ধক রয়েছে। এটি শারীরিক গঠনের উন্নতি ঘটায় ও পেশী শক্তিশালী করে। এটি  পুরুষের শুকানু বাড়াতে বেশ কার্যকর। এর মূল ও পাতা স্নায়ুর বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে। দুধ ও ঘিয়ের সাথে এর পাতা ফুটিয়ে খেলে শরীরের শক্তি সঞ্চার করে। মানসিক ও শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে মনোযোগ বাড়ায়।অশ্বগন্ধা মাথা ঝিমঝিম ও অবসাদ কাটায়।

২. ৪ গ্রাম অশ্বগন্ধা গুঁড়ো সঠিক পদ্ধতিতে এক বছর খেলে শরীর  শক্তিশালী হয় এবং রোগ বালাই ও কমে। ১০ গ্রাম অশ্বগন্ধা গুঁড়োর সাথে তিল ও ঘি মিশিয়ে নিন।এতে তিন গ্রাম সিটি মিশিয়ে প্রতিদিন ১-২  গ্রাম করে শীতকালে খেলে শরীরের বল বৃদ্ধি পায়।

৩. সর্দি কাশি দূর করে: সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পেতে অশ্বগন্ধার মুল গুড়া করে খাওয়া যায়। চোখের ব্যথা দূর করতে পারে অশ্বগন্ধা। ক্রনিক ব্রংকাইটিস এর ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা বিশেষ উপযোগী। আধা গ্রাম মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে ব্রংকাইটিস দূর হয়। অশ্বগন্ধার শেকড় গুড়ার সাথে মিছরি মিশিয়ে খেলে কাশির উপশম হয়।

৪. পেটের সমস্যা সমাধান: অশ্বগন্ধার ফল অম্বল, পেট ফাপা, পেট ব্যথা সারানোর পাশাপাশি যকৃত ভালো রাখে। হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে অশোধিত অশ্বগন্ধার গুড়া কিন্তু পেটে সমস্যার সৃষ্টি করে,  তলপেটে ব্যথা হতে পারে। অশ্বগন্ধা খাবার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য ভালো মানের অশ্বগন্ধা বাছাই করে নেয়া ভালো।

৫. ঔষধ হিসেবে: যুগের পর যুগ ভারতে অশ্বগন্ধাকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি সম্পূরক খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

৬. শর্করার মাত্রা কমায়: কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অশ্বগন্ধা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়।

৭. ক্যান্সার প্রতিরোধী: বিশেষজ্ঞদের মতে অশ্বগন্ধা থাকা বিশেষ উপাদান “উইথফেরিন ” ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। এর মুল ও পাতার  নির্যাসে উপস্থিত ফাইটোকেমিক্যালস  নামক পদার্থ টিউমার কোষকে ধ্বংস করে সেই কোষে রক্ত সরবারহ বন্ধ করে দেয়। ফুসফুস,  স্তন, কোলন, মস্তিষ্ক ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার সহ অন্যান্য ক্যান্সার চিকিৎসা সহায়তা করে। যাদের কেমোথেরাপি নিতে হয়, তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়।

৮. ব্রেইনের উন্নতি সাধন: এই উদ্ভিদ ব্রেইনের কার্যকলাপের ( Brain  Function) উন্নতি করে, স্মৃতি শক্তি বাড়ায়।

৯. কোলেস্টেরল কমায়: আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে মতে, অশ্বগন্ধা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের  ( Bad Cholesterol)  মাত্রা কমায়।

১০. স্ট্রেস ( দুশ্চিন্তা) কমায়: অঅশ্বগন্ধায় রয়েছে ” অ্যানজাইলটিক ” নামক উপাদান যা মানসিক চাপকে কমাতে সাহায্য করে, এই উপাদানটি স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে। প্যানিক এটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

১১. যৌনক্ষমতা বাড়ায়: অশ্বগন্ধা পুরুষদের যৌনসমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। টেস্টোস্টেরন পুরুষ দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। গবেষণায় দেখা গেছে,  ৭৫% পুরুষ দেহে অশ্বগন্ধা ভালো কাজ করছে। এটি শরীরের টেস্টোস্টেরন ও প্রোজেস্টেরনের পরিমাণ বাড়ায়, এটি বীর্যের পরিমাণ ও মান বাড়াতে সক্ষম। এক গ্রাম অশ্বগন্ধার গুঁড়ার সাতগে ১২৫ মিলিগ্রাম চিনি মিশিয়ে হালকা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে  বীর্য শক্তিশালী হয়।

১২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: অশ্বগন্ধায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান আছে,  যার মাধ্যমে অশ্বগন্ধা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

১৩. ডায়বেটিস রোগির ক্ষেত্রে: অশ্বগন্ধার মূল ও পাতার নির্যাসে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদান থাকে। পাতার বা মূলের কোষে যে “ফ্ল্যাভোনয়েডস” থাকে তা মানুষের শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে । এছাড়া ও শরীরে লিপিডের পরিমান ঠিক রাখতে সাহায্য করে  থাকে।

১৪. থাইরয়েডের সমস্যা কমায়: অশ্বগন্ধা শরীরে থাইরক্সিন নামক হরমোনের পরিমান বাড়ায়। যাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের পরিমান কম ( হাইপার থাইরয়েড) থাকে তাদের সমস্যা দূর হয়।

১৫. চোখের সমস্যা কমায়: চোখ ভালো রাখতে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা হয়।

১৬. আর্থ্রাইটিস রোগের চিকিৎসায়: আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় আর্থ্রাইটিস  রোগ মুক্তিতে অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয়। ব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে এটি।

১৭. ইনফেকশন থেকে রেহাই : অশ্বগন্ধায় রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা নানা ধরণের ইনফেকশন থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। এর পাতায় রয়েছে এন্টি – ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বকের ইনফেকশন কমায়।দ্রুত ক্ষত সারানোর ক্ষমতাও রয়েছে এই অশ্বগন্ধার।

১৮. হার্টের ক্ষেত্রে: শরীরে রক্ত চলাচল সঠিক রাখে ও হার্টকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

১৯. মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে : অশ্বগন্ধা একটি অ্যাড্যাপটোজেন, যা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

২০. কর্টিসলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ : অ্যাডরিনালিন গ্ল্যান্ডে সমস্যা থাকলে রক্তে কর্টিসলের পরিমান কম বেশি হতে পারে।  অশ্বগন্ধা এই সমস্যা দূর করে কর্টিসলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২১. চুল মজবুত করে : চুলকে ঝলমলে ও মজবুত  করে তুলতে অশ্বগন্ধা খুবই উপযোগী।

২২. খুশকি কমাতে : অশ্বগন্ধার গুঁড়ো দিয়ে তৈরী  করা তেল খুশকি কমায়।

২৩.অকালে চুল পাকা রোধে : অকালে চুল পাকা রোধে অশ্বগন্ধা গাছের নির্যাস খুবই উপকারী। ২ থেকে ৪ গ্রাম অশ্বগন্ধা গুঁড়ো নিয়ে তেলের  সাথে মিশিয়ে চুলে ম্যাসাজ করুন। অশ্বগন্ধার গুনের কারণে অকালে চুল পাকার সমস্যা সেরে যায়।

২৪. দীর্ঘ মেয়াদী জ্বর সারায়: ২ গ্রাম অশ্বগন্ধা গুঁড়ো এবং ১ গ্রাম গিলয় নির্যাস  মিশিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় কুসুম গরম পানি বা মধুর সাথে খেলে দীর্ঘ মেয়াদী জ্বর সারে।

২৫.আঘাতজনিত ব্যথা উপশম : অশ্বগন্ধার গুঁড়ায় গুড় বা ঘি মিশিয়ে  দুধের সাথে পান করলে অস্ত্রের আঘাতজনিত ব্যথা উপশম হয়।

২৬.বাত রোগে অশ্বগন্ধা : দুই গ্রাম অশ্বগন্ধার গুড়ার সাথে গরম দুধ বা পানি বা গরুর ঘি বা চিনির সাথে মিশিয়ে খেলে বাতব্যথায় উপকার পাওয়া যায়।

২৭. চর্মরোগ সারায় : অশ্বগন্ধা পাতার পেস্ট  দিয়ে  ত্বক ধুয়ে নিলে ত্বকের কৃমি নিরাময় হয়। ডায়াবেটিস সহ অন্যান্য ধরনের ক্ষত  সারায়। যেকোনো ধরনের প্রদাহ ও জ্বালাপোড়া নিরাময় করে। অশ্বগন্ধার শিকড় পিষে গরম করে লাগালে হারপিস রোগ সারে।

২৮. লিঙ্গ দুর্বলতায়: অশ্বগন্ধা মূলের গুড়া যথাযথ উপায়ে লিঙ্গে লাগালে লিঙ্গের শিথিলতা দূর হয়। অশ্বগন্ধা করলা ও দারুচিনি সমপরিমাণ মিশিয়ে পিষে চালনিতে চেলে নিন। এই মিশ্রণটি গরুর মাখনের সাথে মিশিয়ে পেনিসের সামনের অংশ বাকি রেখে বাকি অংশে লাগিয়ে কিছুক্ষন পর কুসুম গরম পানি দিয়ে লিঙ্গ ধুয়ে ফেলুন। এতে লিঙ্গের দুর্বলতা দূর হবে।

২৯. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : অশ্বগন্ধার পাউডার বা গুড়ো কুসুম গরম পানির সাথে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

৩০. লিউকোরিয়া নিরাময়ে : অশ্বগন্ধার মূলের ২-৪ গ্রাম গুড়োয় চিনি মিশ্রিত করে সকাল-সন্ধ্যা গরুর দুধের সাথে খেলে লিউকোরিয়ায় উপকার পাওয়া যায়।

৩১. অন্ত্রের কৃমি নিরাময় : অশ্বগন্ধা অশ্বগন্ধা গুড়া ও মধু মিশিয়ে খেলে পেটের কৃমি নিরাময় হয়। এছাড়াও পেটের আরো অন্যান্য অসুখ সারাতে সাহায্য করে।

৩২. গলগন্ড নিরাময়ে : সমপরিমাণ অশ্বগন্ধা গুঁড়া ও পুরানো গুড় মিশিনে নিন। সকালে বাসি পানির সাথে এটি সেবন করুন। এছাড়াও অশ্বগন্ধা পাতার পেস্ট তৈরি করে গলগন্ডে লাগালেও উপকার পাওয়া যায়।

গুড়া করার নিয়ম

ছোট মাটির হাড়িতে মুলগুলো  ভরে সরা বা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে আবার মাটি লেপে শুকিয়ে আগুনে পুড়ে নিতে হয়। এরপর মূল গুলো হাড়ি থেকে বের করে গুড়ো করে নিতে হয়।

অশ্বগন্ধা গুড়া
অশ্বগন্ধা গুড়া (Photo Source: https://www.gettyimages.com/)

অশ্বগন্ধা থেকে তৈরিকৃত কোনো জিনিস সূর্যালোকে রাখবেন না।

অশ্বগন্ধা খাওয়ার নিয়ম

১ কাপ দুধ বা চায়ের সাথে ১-২  চামচ অশ্বগন্ধার গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়া যায়। মানসিক চাপ কমাতে ও যৌন-স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এর গুড়া মধু বা বাদামের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াই উত্তম।

অশ্বগন্ধার ব্যবহার

অশ্বগন্ধা গাছের বিভিন্ন অংশের নির্যাস দিয়ে নানা রকমের টনিক তৈরি হয়ে থাকে, এছাড়াও নানা ধরনের তেল ও শ্যাম্পু তৈরিতে অশ্বগন্ধা ব্যবহৃত হয়।

অশ্বগন্ধার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অন্যান্য ভেষজ ওষুধের মত অশ্বগন্ধার  ও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। দীর্ঘদিন অশ্বগন্ধা খেলে পেটে গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা হতে পারে, পাশাপাশি বমি বমি ভাব ও খাবারে অরুচি হতে পারে । গরম প্রকৃতির ব্যক্তির জন্য অশ্বগন্ধার ব্যবহার ক্ষতিকর। তাই শিশু  বা গর্ভবতীদের খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেয়া ভালো।


অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অশ্বগন্ধার অপকারিতা ভিডিও ব্লগ

যেখানে পাবেন

সাধারণত আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকানে, অনলাইন শপে, অর্গানিক ফুড ও কসমেটিক এর দোকানে অশ্বগন্ধা গুঁড়া ও ফল কিনতে পাওয়া যায়।

অশ্বগন্ধার দাম

১০০ গ্রাম অশ্বগন্ধা গুঁড়ার দাম দাম ১৫০ – ২০০ টাকা।  ১ কেজি অশ্বগন্ধার দাম দেড় হাজার টাকা থেকে দুই হাজার টাকা।

বিশেষ দ্রষ্টব্য

বাজারে বিক্রি  হওয়া অগন্ধায় কাকনাজের শিকড় মিশ্রিণ থাকে। কেউ কেউ একে দেশি অশ্বগন্ধাও বলে থাকে তবে কাকনাজের শিকড় অশ্বগন্ধার চেয়ে কম মানের। তাই কেনার আগে ভালো ভাবে যাচাই বাছাই করে কিনা ভালো।

ব্যবহারের মাত্রা

সব কিছুই পরিমিত ব্যবহার করা উচিত। অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও উপকারিতা উভয়ই রয়েছে। একেক রোগের জন্য এর মাত্রা একেক রকম হয়ে থাকে, কোনো রোগের জন্য পেস্ট, কোনোটার জন্য তেল বা কোনোটার জন্য গুড়া প্রয়োজন। এছাড়াও এর নির্যাসের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে টিংচার তৈরী করা হয় , তবে এর ডোজ রোগীর বয়স ও লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে। এটি ব্যবহার করার আগে  আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।

আশা করি আজকের লেখাটি আপনাদের উপকারে আসবে, যেহেতু অশ্বগন্ধা একটি ভেষজ উদ্ভিদ আর এর উপকারীর পাশাপাশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও রয়েছে। তাই এটি ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করবেন আর অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবে।

বিঃদ্রঃ  এই ব্লগের প্রত্যেকটা ব্লগ পোস্ট Sylhetism ব্লগের নিজস্ব ডিজিটাল সম্পদ। কেউ ব্লগের কোন পোস্ট কিংবা আংশিক অংশ ব্লগের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কপি পেস্ট করে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার অধিকার রাখে। এবং অবশ্যই কপিরাইট ক্লাইম করে যে মাধ্যমে এই ব্লগের পোস্ট প্রকাশ করা হবে সেখানেও কমপ্লেইন করা হবে।

এই ব্লগের কোন লেখায় তথ্যগত কোন ভুল থাকলে আমাদের Contact পেইজে সরাসরি যোগাযোগ করুন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তথ্য যাচাই করে লেখা আপডেট করে দিবো।

এই ব্লগের কোন স্বাস্থ বিষয়ক পোস্টের পরামর্শ নিজের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের মতামত নিবেন, আমরা স্বাস্থ বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ না, আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ হচ্ছে সঠিক তথ্য পরিবেশন করা। সুতারাং কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার অবশ্যই আমরা নিবো না। ধন্যবাদ, ব্লগ কর্তৃপক্ষ।

Author

1 thought on “অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা ২০২২”

Leave a Comment

Scroll to Top