Last Updated on 7th April 2024 by Mijanur Rahman
ডাবের পানি অতি উপকারী ও সুস্বাদু একটি পানীয় এবং শরীরের জন্যে ডাবের পানির উপকারিতা অনেক। বিশেষ করে নিরক্ষীয় অঞ্চলে পানীয় হিসাবে ডাবের পানি অত্যন্ত জনপ্রিয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ডাবের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
বিভিন্ন ভাবে ডাবের পানি প্যাকেজিং করা হয়ে থাকে। টাটকা, ক্যানে বা বোতলে ভরে ডাবের পানি বিক্রি করা হয়। আস্ত ডাব ও কিনতে পাওয়া যায়। কিছু কিছু জায়গায় আবার ডাবের বাইরের সবুজ খোসা ছাড়িয়ে বাকি অংশটুকুকে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে বিক্রি করা হয়। দক্ষিণ এশিয়া (বাংলাদেশ, ভারত) ও মধ্য আমেরিকা (কোস্টারিকা ও পানামায়) বিক্রেতারা আস্ত ডাব বিক্রি করে।
পানির স্বাদের ভিন্নতা
মাটির গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ডাবের পানির স্বাদ একেক জায়গায় একেক রকম হয়ে থাকে। তাই দেশ ভেদে ডাবের পানির স্বাদ কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন, ভারতের ডাব মিষ্টি হয়, ব্রাজিলের ডাব একটু পানসে প্রকৃতির হয়,বাংলাদেশের ডাবের পানি বেশ মিষ্টি হয়, আর এতে হালকা নোনতা স্বাদ থাকে।
ডাবের পানির পুষ্টিগুন
পানি – ৯৫.৫ %
নাইট্রোজেন – ০.০৫ %
ফসফরিক অ্যাসিড – ০.৫৬ %
পটাসিয়াম – ০.২৫ %
ক্যালসিয়াম- ০.৬৯ %
ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড – ০.৫৯ %
প্রতি ১০০ গ্রাম ডাবের পানিতে –
উপাদান | পরিমান |
লৌহ | ০.৫ |
মোট কঠিন পদার্থ | ৪.৭১ |
চিনি | ০.৮০ |
মোট চিনি | ২.০৮ |
আঁশ | ০.৬২ |
ক্যালসিয়াম | ১৫ মিলি গ্রাম |
ফসফরাস | ০.০১ মিলি গ্রাম |
আয়রন | ০.১ মিলি গ্রাম |
ভিটামিন বি | ০.১১ মিলি গ্রাম |
ভিটামিন বি২ | ০.০২ মিলি গ্রাম |
ভিটামিন সি | ৫ মিলি গ্রাম |
খাদ্যশক্তি | ২৩ কিলো ক্যালরি |
এছাড়াও রয়েছে রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিন।
ডাবের পানির উপকারিতা
প্রাকৃতিক স্যালাইন হিসেবে কাজ করে
ডাবের পানিকে প্রাকৃতিক স্যালাইন বলা হয়ে থাকে। যারা রোদে কাজ করে,তারা দিনে দুই – তিনটি ডাব খেতে পারেন। ডাবের পানিতে উপকারী উৎসেচক বা এনজাইম (Enzyme) থাকে যা হজমে সাহায্য করে।
শরিরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে
ডাবের পানি আমাদের শরীরে পানি ভারসাম্য বজায় রাখে। তাই নিয়মিত এবং পরিমিত ডাবের পানি আমাদের শরিরের জন্য বিশেষ উপকারী।
দেহে খনিজ পদার্থের চাহিদা মেটায়
ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম রয়েছে যা আমাদের দেহের খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরন করতে সক্ষম। বাচ্চাদের গ্রোথ বাড়াতে ডাবের পানি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
ডাবে রয়েছে মূত্রবর্ধক উপাদান
ডাবের পানিরতে রয়েছে মূত্রবর্ধক উপাদান যা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট (Urinary tract) পরিষ্কারে সাহায্য করে, ইউরিনারি ট্র্যাক্টের সংক্রমণ রোধ করে এ ছাড়াও ডাবের পানি থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
হজমে সহায়তা করে
ডাবের পানি হজমে সাহায্য করে,তাই ভারী খাবারের পর ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে।
নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে গ্যাসট্রিকের সমস্যা আস্তে আস্তে কমে যাবে।ডাবের পানি বদহজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
হাড় ভালো রাখে
ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়কে শক্ত করে। এছাড়াও ডাবে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায়
ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে খনিজ লবণ, যেমন – ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg) ও ফসফরাস (P) এসব উপাদান দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। দাঁতের মাড়ি শক্ত করে,দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়।মজবুত করে। মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, মাড়ির কালচে ভাব ও দাঁত লাল হয়ে যাওয়া সহ দাঁতের আরো নানা সমস্যা দূর করে।
শরীরকে ডিটক্সিফাই (Detoxify) করে
ডাবে বিদ্যমান উপাদানসমূহ শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস ডাবের পানি পান করলে অনেক রোগ শরিরে বাসা বাধতে পারে না।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আনে
ডাবের পানিতে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ডায়াটারি ফাইবার যা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।তাই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আসে। ডাবের পানিতে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে যা শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখে।
পানিশূন্যতা রোধ করে
ডাবের পানিতে থাকা ইলেকট্রোলাইট শরীরের ভিতরে খনিজ পদার্থের চাহিদা মেটায়। ডায়ারিয়া, বমি, অতিরিক্ত ঘামের পর শরিরে যে পানিশুন্যতা ও খনিজের ঘাটতি হয়, ডাবের পানি সেই শুন্যতা মেটায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ডাবের পানিতে রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিনের রয়েছে যা শরিরের জন্য অনেক উপকারী উপাদান। নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়াও ডাবের পানিতে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল (Antibacterial) এবং এন্টিফাংগাল (Antifungal) গুনাগূন ও রয়েছে।
বার্ধক্য রোধ করে
ডাবের পানিতে সাইটোকিনিস নামক এন্টি এজিং (Anti aging) উপাদান রয়েছে। তাই নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না। ডাবের এই বিশেষ উপাদানটি বার্ধক্যের ছাপ রোধে কাজ করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
ডাবের পানি আমাদের শরিরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডাবের পানির প্রাকৃতিক মিনারেল শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে ফলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রনে আসে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বা এল ডি এল এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।
ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে ডাবের পানি অধিক কার্যকরী। ডাবের পানিতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।এছাড়াও ডাবের পানি শরিরে ব্লাড সার্কুলেশন ভালো রাখে।
মাথা ব্যথার প্রকোপ কমায়
বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে, এর মাঝে ডিহাইড্রেশন ও মাথা ব্যথার অন্যতম একটি কারণ। ডিহাইড্রেশনের কারণে মাইগ্রেন অ্যাটাক হতে পারে। এমন অবস্থায় এক গ্লাস ডাবের পানি খেলে মাথা ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি মিলবে। ডাবে থাকা ম্যাগনেসিয়াম দ্রুত মাথা ব্যথা সারাতে সহায়তা করে।
ত্বকের ইনফেকশন (Infection) রোধ করে
অনেকে চামড়ার ইনফেকশনে ভুগে থাকেন। বিশেষ করে বর্ষার সময়টায়। ডাবের পানি খুব সহজেই এই ইনফেকশন দূর করতে পারে। সরাসরি ত্বকে ডাবের পানি লাগাতে পারেন এবং গোসলের পানির সাথে ডাবের পানি মিশিয়ে নিন। ইনফেকশন অতি দ্রুত দূর হবে।
সান ট্যান (Sun tan) দূর করে
ত্বক রোদে পুড়ে গেলে ডাবের পানি দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক ব্যাবহার করতে পারেন। ডাবের পানি, বেসন ও অল্প মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন।
এছাড়াও এক চিমটে কর্পূরের সাথে মসুর ডাল, শসার রস ও ডাবের পানি মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে রোদে পোড়া কালো দাগও কমবে।
ত্বক আর্দ্র রাখে
প্রতিদিন ডাবের পানি পান করলে ত্বক আর্দ্র থাকার পাশাপাশি ব্রণের সমস্যা কমে। ডাবের পানি ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব ও ক্ষারতা দূর করতে সহায়তা করে।এছাড়া এতে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক বিরোধী ক্ষমতা।ডাবের পানিতে পটাসিয়াম, লরিক এসিড, এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় তা একজিমা প্রতিরোধে পরোক্ষভাবে কাজ করে। ত্বকের ইনফেকশন রোধে ডাবের পানির ব্যবহার বেশ প্রচলিত রয়েছে। ডাবের পানিতে আছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ( Antifungal) ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল (Antibacterial) গুণ। এছাড়াও ডাবের পানি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।
একনির (Acne) সমস্যা দূর হয়
ডাবের পানি তুলায় ভিজিয়ে একনি বা ব্রণের উপর লাগাতে পারেন, ব্রণের সমস্যা দূর করতে ডাবের পানি দারুণ কার্যকর। সন ধরনের ত্বকের জন্যই প্রযোজ্য। তাছাড়া ডাবের পানি খেলেও ত্বক ভালো থাকে। আদ্র হয়। ডাবের শাঁসে যে ক্যালরি রয়েছে তাতে কর্মক্ষমতা বাড়ে। গরমের সময় ঘামাচি হলে বা কোনো কারনে ত্বক পুড়ে গেলে, এমন স্থানে ডাবের পানি লাগালে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। মুখে বসন্তের দাগ দূর করতে ডাবের পানি দিয়ে আইস কিউব বানিয়ে নিয়মিত মুখে ঘষলে দাগ ধীরে ধীরে দূর হয়ে।
ফেসওয়াস (Facewash) হিসেবে
সকালে এবং রাতে ডাবের পানি দিয়ে ফেসওয়াশের মত করে মুখ ধুতে পারেন। ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুলে মুখমণ্ডলে জমে থাকা ময়লা ও জীবানূ ধ্বংস হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল ও রোগমুক্ত থাকে।
প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে
ডাবের পানি হচ্ছে প্রাকৃতিক টোনার। এটি ত্বককে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোয় কাজ করে। এছাড়াও ব্রণের প্রকোপ কমাতে ও দাগ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের পোরস (Pores) ছোট করে আনে, স্কিনকে ময়েশ্চারাইজ করার পাশাপাশি স্কিনের পিএইচ ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ফেসমাস্ক হিসেবে
ডাবের পানি, হলুদ এবং চন্দন গুড়া মিশিয়ে ফেসমাস্ক তৈরি করা যায়। মাস্কটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মাস্ক ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল এবং কোমল।
মসুর ডালের গুঁড়া,এলোভেরা জেল ও ডাবের পানি বাটিতে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি ২০ মিনিট মুখে রাখুন, এরপর ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক বা ফেস মাস্কটি ত্বককে করবে সতেজ।
ক্লিঞ্জার (Cleanser) হিসেবে ডাবের পানি
ডাবের পানি স্কিন ক্লিন করে। এটি স্কিনকে হাইড্রেট রাখে এবং স্কিনের ময়লা দূর করে। সেনসিটিভ স্কিনের জন্যে ডাবের পানি বেস্ট ক্লিঞ্জার হিসেবে কাজ করে। ডাবের পানিতে কটন বল চুবিয়ে নিয়ে তা স্কিনে হালকা করে ঘষে নিন। স্কিন ক্লিন হয়ে যাবে।
স্ক্রাবার (Scrubber) হিসেবে
চালের গুঁড়ার সাথে হাফ চা চামচ মধু এবং ১ চা চামচ ডাবের পানি মিশিয়ে একটি মিশ্রণ করে নিন। পুরো মুখে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন।এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
হাইপারপিগমেন্টেশন (Hyper pigmentation) দূর করে
ডাবের পানি হাইপার পিগমেন্টেশন দূর করতে পারে। ডাবের পানি, লেবুর রস ও এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মিশ্রনটি তুলার বলের সাহায্যে মুখে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
স্কিন লাইটেনিং (Skin lightening) ক্রিম বানাতে
ময়েশ্চারাইজার লোশন বা ক্রিমের সাথে ১ চা চামচ ডাবের পানি মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন রাতে ঘুমের আগে এই ক্রিম ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এটি স্কিন লাইটেনিং এর কাজ করবে।
স্কিন লাইটেনিং মাস্ক তৈরির জন্য,
৩ চা চামচ ডাবের পানির সাথে ১ টেবিল চামচ আটা এবং আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ -২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে হালকা হাতে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন।
চুল পড়া রোধ করে
বিভিন্ন কারনে চুল পড়তে পারে। শ্যাম্পুর পর ডাবের পানি দিয়ে চুল ধুলে চুল পড়া কমে। এতে চুলের ঔজ্জ্বল্যও বাড়বে। ডাবের পানি হালকা গরম করে তা চুলের গোড়ায় মালিশ করলেও চুল পড়া কমবে।
রক্ত জমাট বাধা প্রতিরোধ করে
ডাবের পানিতে অ্যান্টি-থ্রমবোটিক (Anti thrombotic) কার্যকারিতা আছে যা রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে পারে।
ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা । Daber panir upokarita ebong opokarita
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
- শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করে।
- শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে।
- গ্যাস্ট্রিকের হাত থেকে রেহাই দেয়।
- হজমে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- শরীরের তরল উপাদান ও আর্দ্রতা বজায় রাখে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
- ভ্রূণের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
বিভিন্ন টাইপের ত্বকের জন্য ডাবের পানির ব্যবহার
স্বাভাবিক ত্বকের জন্য (For Normal skin),
তাজা ডাবের পানিতে এক ঘন্টা চন্দন কাঠ ভিজিয়ে রাখুন।এরপর চন্দন কাঠ ঘষে পেস্ট তৈরি করে সেই পেস্ট মুখে লাগিয়ে রাখুন।পেস্টটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই পেস্ট ত্বক থেকে মৃত কোষ সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য(For oily skin),
ডাবের পানি ও মুলতানি মাটি মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে ত্বকে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য (For dry skin),
কিছু কাঠবাদাম ডাবের পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। বাদামগুলো ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে আধাঘন্টা রাখুন, এরপর ধুয়ে ফেলুন।
ডাবের পানির অপকারিতা
শরীরের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান কমে যায়
অতিরিক্ত ডাবের পানি পান করলে প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে প্রস্রাবের সাথে শরিরের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বের হয়ে যায়।এতে করে শরিরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটতে পারে যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
ল্যাক্সেটিভ প্রভাব
ডাবের পানি প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ বা রেচক হিসেবে কাজ করে। যাদের আন্ত্রিক কাজ বা বাউয়েল মুভমেন্টে (Bowel movement) সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি উপযোগী নয়।
এলার্জি হতে পারে
অনেকের ডাবের পানিতে এলার্জি হতে পারে। এসব রোগিরা যদি ডাবের পানি পান করে তাহলে তাদের শরীরে র্যাশ হতে পারে, ঘন ঘন হাঁচি আসতে পারে। তাই যাদের এলার্জি আছে তাদের ডাবের পানি না খাওয়াই ভালো।
কিডনি রোগিদের জন্য ক্ষতিকর
ডাবে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম থাকে। কিন্তু কিডনি রোগিদের কিডনি শরির থেকে অতিরিক্ত পটাশিয়াম বের করতে পারে না, ফলে দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা মাত্রারিক্ত বেড়ে যেতে পারে। এজন্য কিডনি রোগিদের ডাব খাওয়া উচিত না।
রক্তচাপ বৃদ্ধি করে
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ডাবের পানি না খাওয়াই ভালো।ডাবের পানিতে সোডিয়াম থাকে যা রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এক কাপ ডাবের পানিতে ২৫২ মিলি গ্রাম সোডিয়াম থাকে। এই সোডিয়াম উচ্চরক্তচাপের রোগীদের রক্তচাপ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
রক্তের চিনির মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে
ডাবের পানিতে যদিও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামুলক কম থাকে কিন্তু এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী নয়। ডাবের পানি রক্তে চিনির মাত্রা কিছুটা বাড়িয়ে ফেলতে পারে। তাই ডায়বেটিক রোগীদের জন্য ডাবের পানি এড়িয়ে চলা ভালো।
প্রাকৃতিক যে কোনো উপাদানের উপকার পেতে কিছুটা সময় লাগে, ধৈর্য্য ধরা প্রয়োজন। ডাবের পানি প্রকৃতির অনন্য একট দান, যার রয়েছে বহুমুখী গুণাবলী। নিয়মিত ডাবের পানির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।