নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়, ৭টি কার্যকরী টিপস ২০২৪

নরমাল ডেলিভারি

Last Updated on 7th April 2024 by Mijanur Rahman

প্রেগন্যান্সি নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয়। মা হওয়া পৃথিবীর সুন্দর অনুভূতির একটি। কিন্তু এখানে চিন্তার বিষয় একটিই। সন্তান কিভাবে হবে? নরমাল ডেলিভারি নাকি সেই কাটাকাটির ঝামেলায় যেতে হবে। আগে নরমাল প্রেগন্যান্সি ছিলো সাধারণ একটি বিষয়।

এখন অনেকেই প্রেগন্যান্সির ব্যাথা সহ্য করতে চায় না বলে সিজারিয়ান হয়ে থাকে। কিন্তু এক গবেষণায় দেখা গেছে নরমাল ডেলিভারিতে মা ও সন্তান উভয়েই সুস্থ থাকে। শরীরে কোন বড় ধরনের সমস্যা না থাকলে কিছু জিনিস মেনে চললেই স্বাভাবিক নিয়মে কাটাছেঁড়া ছাড়াই সন্তান জন্ম দেওয়া যায়। []

তো যাই হোক, আজকের লেখাতে আমারো জানবো নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়, জরায়ুর মুখ খোলার ঘরোয়া উপায় বা ডেলিভারি পেইন উঠানোর উপায় এছাড়াও আমরা এই লেখাতে দেখবো নরমাল ডেলিভারির জন্য কি কি খেতে হবে, এবং নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয়।

তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেই নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় নিয়ে আজকের এই লেখাটি।

নরমাল ডেলিভারি কি?

নরমাল ডেলিভারির অর্থ হচ্ছে, এটি একটি স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। সাধারণত মানুষ ভ্যাজাইনা বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে সন্তান প্রসব করাকে চিকিৎসার পরিভাষায় এটিকে নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি বলা হয়। শিশুর মাথা জরায়ুর মুখ থেকে বের হতে পারলেই নরমাল ডেলিভারি সম্ভব। শিশুর গ্রোথ, মাথার অবস্থানের উপর নির্ভর করে ডেলিভারি কেমন হবে। গর্ভের শিশু উল্টা অবস্থায় থাকলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব না।

আরো সহজ করে বললে, যে ডেলিভারি ডাক্তার বা হাসপাতালের সহায়তা ছাড়া করা হয় তাকেই নরমাল ডেলিভারি বলে।

নরমাল ডেলিভারি কেন গুরুত্বপূর্ণ

মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ হলো এই নরমাল ডেলিভারি। নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হলে সন্তানের মায়ের সুস্থ হতেও কম সময় লাগে। নরমাল ডেলিভারিতে বাচ্চা হলে কিছু ব্যাকটেরিয়া বাচ্চার মধ্যে প্রবেশ করে যা বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

নরমাল ডেলিভারিতে প্রসবের সময় অ্যামনিয়োটিক নামক তরলের সংস্পর্শে আসে বাচ্চাটি, যার ফলে বাচ্চাটির শ্বাসকষ্টের সম্ভাবনা কমে যায়। সিজারিয়ান পদ্ধতির ক্ষেত্রে জরায়ুতে অক্সিজেন কম প্রবেশ করায় যার জন্য সেরে উঠতে বেশি সময় লাগে। আর নরমাল ডেলিভারিতে তার উল্টো টা। এছাড়াও আরো যে সুবিধা রয়েছে নরমাল ডেলিভারিতে। যেমন

  • নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে বাচ্চা সহজেই মাতৃদুগ্ধ পান করার পদ্ধতি শিখে যায়।
  • নরমাল ডেলিভারিতে কোন কাটাকাটির ঝামেলা নেই বিধায় রোগীর সেরে উঠতে কম সময় লাগে।
  • যারা নরমাল ডেলিভারিতে সক্ষম তারা সিজারিয়ানদের থেকে বেশি কর্মক্ষম ও সাহসী হয়ে থাকেন।
  • নরমাল ডেলিভারিতে প্রসব বেদনা একটু বেশি সহ্য করতে হয় ঠিকই কিন্তু একবার প্রসব হয়ে গেলে পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা হয় না।

নরমাল ডেলিভারি শরীর জন্য যে কতো ভালো তা ডেলিভারির পরেই জানতে পারবেন।

মা ও সন্তান
মা ও সন্তান

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয় হলো আপনাকে অন্তর থেকে শক্ত থাকতে হবে, এবং সবসময় পজেটিভ চিন্তা করতে হবে, এছাড়াও কিছু নিয়ম মেনে চললে খুব সহজেই নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভব। তাই চলুন জেনে নেই নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সহজ উপায়গুলি।

ডায়েট

প্রেগন্যান্ট জানার পর থেকে নিজের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া শুরু করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট চার্ট মেনে চলুন। স্বাস্থ্যকর খাবার, টাটকা শাক সবজি, ফলমূল প্রচুর পরিমানে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও খাদ্য তালিকাত মাল্টিভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ খাদ্য রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে শরীরের পেশি চত শিথিল থকবে নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা ততো বাড়বে।

একটিভ থাকা

অনেকে প্রেগন্যান্সির খবর শুনেই শুয়ে বসে কাটাতে শুরু করে। তারা ভাবে এই সময়ে কোন কাজ করা যাবে না। কিন্তু এটা একদমই ভুল ধারনা। বরং প্রেগন্যান্সির সময় নিজেকে যতো একটিভ রাখা যায় ততো ভালো। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সুযোগ ততো বেশি।

চিকিৎসক যদি বেড রেস্ট না বলে, অন্য কোন সমস্যা না থাকে তবে নিজেকে একটিভ রাখুন। একটিভ রাখতে যা যা করতে পারেন –

  • বাড়ির হালকা কাজ কর্ম করতে পারেন।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হালকা ব্যায়াম বা যোগাব্যায়াম করুন।
  • সকাল সন্ধ্যা হাটতে পারেন। এতে ওজন কম থাকবে, শরীর সুস্থ থাকবে, নরমাল ডেলিভারির চান্সও ততো বাড়বে।

পানি

পানি আমাদের শরীরের অত্যাবশকীয় একটি জিনিস। শরীরের ফ্লুইড চলাচলের জন্য পানি খুব জরুরি। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খেতে হবে। এতে রক্ত চলাচল ভালো হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য এর সমস্যা হয় না। সুতরাং যতো বেশি পানি খাওয়া যায় ডেলিভারি ততো সহজ হবে।

স্ট্রেস

নরমাল ডেলিভারির জন্য শরীর সুস্থ্য ও ঝরঝরে রাখা জরুরী। স্ট্রেস বাড়লেই শরীর খারাপ হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় যতো স্ট্রেস কম নেওয়া যায় ততো ভালো। এই সময়ে নিজেকে হাসিখুশি প্রফুল্ল রাখতে হবে। প্র‍য়োজনে মনোবিদের কাছে যাওয়া যেতে পারে। প্রেগ্ন্যাসির মাসাজ নিলেও স্ট্রেস কমে।

জন্মের পরিকল্পনা

গর্ভাবস্থার শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিকল্পনা করে নিতে হবে। আপনার সমস্যা খুলে বলুন। ডক্তারের পরামর্শ, নিয়ম কানুন, নির্দেশ মেনে চলুন। এতে চিন্তা কম হবে। গোটা ব্যাপারটাই  সহজ মনে হবে।

প্রেশার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

গর্ভাবস্থার আগে থেকেই যাদের প্রেশার ও ডায়াবেটিস সমস্যা রয়েছে তাদের তা নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। যাতে এগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকে।

অভিভাবক ক্লাস

বাচ্চা জন্মের আগে বাড়ির কাছে কোন প্যারেন্টাল ক্লাস থাকলে সেখানে যান। সেখানে বাচ্চা জন্মানো থেকে শুরু করে সব কিছু শিখানো হয়। কিভাবে সহজে, কম কষ্টে কম সময়ে বাচ্চা জন্মানো যায় সেসব শেখানো হয়।

যোগাব্যায়াম

নরমাল ডেরিভারির জন্য যোগাব্যায়াম অত্যান্ত কার্যকরী। এতে শরীরের পেশী শিথিল থাকে। নরমাল ডেলিভারির জন্যে শরীরের পেশী শিথিল থাকা জরুরী। এছাড়াও যোগাব্যায়ামে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, স্ট্রেস কমে। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়
যোগাব্যায়াম

জরায়ুর মুখ খোলার ঘরোয়া উপায়

জরায়ুর মুখ খোলার ঘরোয়া উপায় হলো যতবেশি সম্ভব হাটাচলা করা, এছাড়াও নিচের জিনিষগুলি দ্রুত জরায়ুর মুখ খুলতে সাহায্য করবে বা ডেলিভারি পেইন উঠতে সহয়াতা করবে।

  • ব্যায়াম ডেলিভারি পেইন উঠানোর জন্যে বেশ পরিচিত একটি উপায়
  • স্তনবৃন্তকে উত্তেজিত করা, যা ম্যাসেজ কিংবা কিছুটা শক্তি নিয়ে টিপ দেওয়া
  • বেশি বেশি খেজুর খাওয়া, খেজুর জরায়ুর মুখ খুলতে খুবই কার্যকারী একটি খাবার
  • স্বামীর সাথে সহবাস করা, গবেষণায় দেখা গেছে জরায়ুর মুখ খুলতে সহবাস ঝাদুর মতো কাজ করে []
  • জ্বাল জাতীয় খাবার খাওয়া।

কখন নরমাল ডেলিভারি সম্ভব না?

১. খাটো নারীর জরায়ু ছোট থাকে এবং স্বাভাবিকভাবে তাদের সন্তানও ছোট হবে। অনেক সময় দেখা যায় জরায়ু ছোট কিন্তু পেটের সন্তানের আকার বড়। তখন নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হবে না। []

২. প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হলে অনেকেউ রিলাক্স থাকতে পারে না। তখন বার্থ ক্যানেল ফ্রি থাকে। এক্ষেত্রে শিশুর ওজন অনেক বেড়ে যায় এবং তখন চিকিৎসক নরমাল ডেলিভারির পরামর্শ দেয় না।

৩. সন্তান পেটে থাকা অবস্থায় পানির পরিমাণ দেখে বোঝা যায়। পানি বেশি থাকলে প্রসবের সময় নবজাতকের মুখ খুঁজতে সুবিধা হয়। পানি কম থাকলে যে নালি দিয়ে সন্তান মায়ের শরীর থেকে খাবার নেয়, তাতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৮ থেকে ২২ সেন্টিমিটার নরমাল পানির পরিমাণ। পানি কম থাকলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হয় না।

৪. গর্ভফুল সাধারণত জরায়ুর উপরে কিংবা সামনে-পেছনে থাকতে পারে। নরমাল ডেভিভারির জন্য সন্তান নিচের দিকে আর গর্ভফুল উপরের দিকে থাকতে হয়। আর যদি এর উল্টো হয় তবে আর নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হবে না।

৫. সবকিছু ঠিক থাকার পরও নরমাল ডেলিভারির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত একমাত্র আপনার ডাক্তার নিতে পারেন। কারণ এই দীর্ঘ সময়ে গর্ভবতীর শরীরে নানারকম পরিবর্তন আসে।

গর্ভাবস্থার শিক্ষা

গর্ভাবস্থার শিক্ষার জন্য বই এবং ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এই শিক্ষা গ্রহন করার মাধ্যমে বুঝতে পারা যাবে যে গর্ভাবস্থার কোন মাসে কোন জিনিসগুলি গ্রহণ করতে হবে এবং কোনটি এড়িয়ে চলতে হবে। এর সাথে, অন্যান্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানা যাবে।

  • যেমন-  ক্যাফিন থেকে দূরে থাকা উচিত
  • খাবার খাওয়া উচিত।
  • ফলমূল বেশি খাওয়া উচিত।
  • পেটে চাপ দেওয়া এড়ানো উচিত।
  • দীর্ঘ সময় ধরে মাথা নিচের দিকে রাখা উচিত নয়।
  • ফলের রস এবং দুধ খাওয়া উচিত।
  • সবুজ সবজি ডায়েটে থাকা উচিত।
  • প্রতিদিন প্রচুর ভিটামিন প্রয়োজন
  • গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক প্রসবের বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার
  • নিয়ম করে ওমেগা এসিড গ্রহন করা উচিত
  • রেগুলার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত
  • শরীরের ওজনের বৃদ্ধি ও হ্রাসের চার্ট করা উচিত
  • মানসিক অবসাদ মুক্ত থাকা উচিত

বই পরে বা ইন্টারনেটে এই সমস্ত বিষয় গুলো দেখে যদি কোন সমস্যা মনে হয় যত দ্রুত সম্ভব স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থার শিক্ষা
গর্ভাবস্থার শিক্ষা

গর্ভাবস্থায় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে

গগর্ভাবস্থার সময়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই সময়ে শুধু খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিলেই হবে না অন্যান্য কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে। কারণ এটি আপনাকে একটি সুস্থ শিশু জন্মাতে সাহায্য করবে৷ সেই সাথে নিজেও সুস্থ থাকবেন। ডায়েটে কোন জিনিস খাওয়া উচিত আর কোন জিনিস এড়িয়ে চলা উচিত তা মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে নরমাল ডেলিভারি হলো অনেক কিছু মিশ্রনের ফল।

– হাসিখুশি থাকুন।

– মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে

– ক্যাফেন এড়িয়ে চলুন

সিগারেট ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।

– পরিবারকে সময় দিন।

– নিজেকে যতোটা সম্ভব সচল রাখা যায়।

– ভালো মুভি, গান শুনুন।

– প্রার্থনায় মনোনিবেশ করতে পারেন।

– ফাস্ট ফুড, কোল্ড ড্রিংক এড়িয়ে চলুন।

– সময় মতো চেকাপে থাকুন।

– নরমাল ডেলিভারি মূলত স্বাস্থ্য এর উপর নির্ভর করে।

দেখা যায় সব কিছু মেনে চলার পরও কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কোন সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

নরমাল ডেলিভারির লক্ষণ

একজন সঠিক স্বাস্থ্যবতী মহিলার নরমাল ডেলিভারির জন্য এর সম্ভাব্য লক্ষণগুলি নিচে উল্লেখ করা হলঃ

* ৩০ থেকে ৩৪ সপ্তাহের মধ্যে,গর্ভের বাচ্চাটি সিফালিক অবস্থানে আসে। মাথা নিচের দিকে চলে আসে ও দেহটি অনেকটা নিচের দিকে নেমে আসে।

* ঘন ঘন মলত্যাগ হতে পারে কারণ বাচ্চার মাথা পেলেভিক অঞ্চলের নিচের দিকে চাপ সৃষ্টি করে মূত্রাশয়কে সঙ্কুচিত করে বলে।

* পিঠের নিম্ন অংশে ব্যথা হতে পারে কারণ গর্ভস্থ বাচ্চাটি ঐ অংশের উপর চাপ দিতে থাকে।

* যোনি স্রাব বৃদ্ধি পাবে, এটা সাদা বা গোলাপী রঙের হয় এবং কোনো ক্ষেত্রে এটিতে রক্ত  মিশে থাকতে পারে। এটি একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক গর্ভাবস্থার চিহ্ন বল ধরা হয়।

* শরীরের অস্থিরতা বাড়তে পারে।

* স্তনের ফোলাভাব স্বাভাবিক প্রকৃতির প্রসবের লক্ষণ বলে ধারনা করা হয়। প্রেগন্যান্সির শেষের দিকে পৌঁছানোর পর অনেক সময় স্তনকে ভারী মনে হয়।

* সাধারণত প্রসব যন্ত্রণা উঠলে জলের থলি ভেঙে যায় বা যেতে পারে। অনেক সমাই এটি যন্ত্রণা শুরু হওয়ার আগেও ভেংে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত বা রোগীকে হাস্পাতালের নিয়ে যেতে হবে।

সবার ক্ষেত্রে এই লক্ষন প্রকাশ নাও হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই নরমাল ডেলিভারি হয়ে থাকে কেউ কেউ অনেক ধরনের জটিলতায় ভুগে থাকে। যেসব জটিলতা দেখা যায়

* তলপেটে গরম গরম ভাব অনুভব করা

* পেশির সংকোচ বেড়ে যায়

* যোনি থেকে রক্তপাত হওয়া

* পিঠে তিব্র ব্যাথা অনুভব করা।


নরমাল ডেলিভারি হওয়ার টিপস

নরমাল ডেলিভারি কতোটা বেদনাদায়ক হতে পারে?

নরমাল ডেলিভারি কেন ভালো তা তো জানা হলো এবার আসি নরমাল ডেলিভারি বেশি বেদনা দায়ক কিনা। প্রসব ব্যাথা শারীরিক স্বাস্থ্য, উদ্বাগ, শরীরের অবস্থা, ভুল বা কোন প্রশিক্ষণ না থাকা এবং মায়ের কম পুষ্টি এসবের উপর নির্ভর করে।

এই প্রক্রিয়ায় শিশু গর্ভ থেকে জোর করে বেরিয়ে আসে। এটিই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। তাই এটি থেকে দ্রুত সেরে ওঠা যায়। ব্যাথা হবে কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি থাকলে এই ব্যথা সহনযোগ্য হবে। উপরে উল্লেখিত উপায় গুলো মেনে চললে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

নরমাল ডেলিভারির জন্য কি খেতে হবে?

নরমাল ডেলিভারির জন্যে বেশি বেশি পানি খেতে হবে, এছাড়াও খাবারের মধ্যে নিয়মিত ডিম, দুধ, সবুজ শাকসবজি, প্রোটিন জাতীয় খাবার, ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এই সময়ে আরো একটি খাবার খাওয়া গর্ভবতী মায়ের জন্যে খুবই দরকারি, সেটি হলো ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার।

রিলেটেডঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা, আল্টিমেট গাইডলাইন

শেষ কথা

বর্তমানের ব্যস্ত সময়ে অনেকেই গর্ভকালীন অবস্থায় নিজেদের যতাযত যত্ন নিতে পারেন না বলে অপারেশন করতে হয়। এতে প্রচুর রক্তপাত হয়। পরবর্তীতে আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আপনি হয়ত এই চিন্তা করে ভয় পাচ্ছেন।

ভয়ের তেমন কিছু নাই, উপরের নিয়মগুলি ঠিকমতো অনুসরণ করলে যে কেউ ই নরমাল ডেলিভারিতে বাচ্চা প্রসব করতে পারবে, এতে মা ও সন্তান ই সুস্থ্য থাকে।

তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকে আমাদের লেখা নরমাল ডেলিভারি করার পদ্ধতি ও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য করণীয় কিছু কার্যকারী উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। লেখা নিয়ে যদি কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

Author

Scroll to Top