গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখবেন? ২০২৪

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি

Last Updated on 7th April 2024 by Mijanur Rahman

ডিজিটাল যুগে গ্রাফিক্স ডিজাইন ছাড়া প্রায় চলাই যায় না। ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রতিটা বিষয়েই গ্রাফিক্সের ছোঁয়া রয়েছে। ডিজিটাল জগতের সবকিছুই কাল্পনিক, এই কাল্পনিক জগতটাকে পরিপূর্ণ রূপ দেযা হিয় গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে।

কখনো বা বাস্তব জগতটাকেই ডিজিটাল পর্দায় তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে গ্রাফিক্স ডিজাইন। আজকে আমরা আপনাকে জানাবো গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? কিভাবে শিখবেন, গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করা যায় কিনা, কিভাবে আয় করবেন এবং বিস্তারিত।

গ্রাফিক্স ডিজাইন

গ্রাফিক্সকে বলা হয় অঙ্কন বিষয়ক জ্ঞান। যা একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে এবং তা আমাদেরকে কোন ভাবার্থ বা বিনোদন অথবা স্বচিত্রক ভাব প্রকাশ করে। এটি মূলত ব্যবহার করা হয়- কোন উপাত্ত (ড্যাটা) প্রকাশের উদ্দেশ্যে, কম্পিউটার বিষয়ক নকশা বা শিল্পজাত করণে, গ্রাফিক্স আর্ট বা ছাপাখানায় অক্ষর বিন্যাসে অথবা শিক্ষামূলক বা বিনোদন মূলক সফ্ট‌ওয়্যার নির্মানে ।

যখন কোন কম্পিউটার দ্বারা কোন নকশা ডিজাইন করা হয় তখন তাকে বলে কম্পিউটার গ্রাফিক্স । কম্পিউটার গ্রাফিক্স এমনি একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা কোন সিস্টেম প্রোগ্রামিং ছাড়াই কোন ব্যক্তি দৃশ্যমান টুল ব্যবহারের মাধ্যমে একটি নকশাকে উন্নত করতে পারে ।

(সূত্র: উইকিপিডিয়া) রিলেটেডঃ ফ্রিল্যান্সিং কি? মার্কেটপ্লেস, কাজ পাওয়ার উপায়

ক্যারিয়ার হিসেবে

বর্তমান যুগে অনেকেই ক্যারিয়ার  হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইন বেছে নিচ্ছে। ডিজিটাইলেশনের এই যুগে গ্রাফিক্স ডিজাইন কে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়াটা যুগোপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাফিক্স ডিজাইনকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য  কয়েকটা কারন নিয়ে আলোচনা করছি –

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি
গ্রাফিক্স ডিজাইন

১. সৃজনশীল বা ক্রিয়েটিভ পেশা (Creative occupation) :

গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি সৃজনশীল পেশা, এইখানে গ্রন্থগত বিদ্যা তেমন কাজেই আসে না। আপনি যত ক্রিয়েটিভ হবেন আপনার উন্নতি তত বেশি। অনেক ধৈর্য্য ও প্র‍্যাকটিসের (Practice)  প্রয়োজন।  আমাদের সমাজে সাধারণত ডিজাইন বা সৃজনশীল কাজের কদর খুবই কম হয়ে থাকে। কিন্তু গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর ক্ষেত্রে এই সৃজনশীলতার কদরই বেশি করা হয়।

২. কাজের স্বাধীনতা :

নিজের সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী কাজ করার সুবিধা রয়েছে। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে থাকেন তাহলে আপনি আপনার সময়, সুবিধা অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। বাধা ধরা কোনো নিয়ম বা সময়  থাকবে না। মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করে নিজের কাজের স্যাম্পল বা পোর্টফোলিও (Portfolio)  তৈরি করে রাখতে পারেন। আপনার কাজের স্যাম্পল দেখে যদি  বায়ার (Buyer) বা ক্লায়েন্টের (Client)  ভালো লাগে তাহলে সে আপনার একাউন্টের মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।

৩. অধিক চাহিদা:

ডিজিটাইলেজনের (Digitalization) এই যুগে  গ্রাফিক্স ডিজাইন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যদি নিজেকে খুব ভালোভাবে দক্ষ করা যেতে পারে, তাহলে এই সেক্টরে অনেক উন্নতি করা যাবে। এই সেক্টরে এখনো তেমন লোকবল হয়ে উঠেনি, তাই এই সেক্টরে দক্ষ লোকবল খুবই জরুরি এবং চাহিদাও বেশি।

৪. বাসায় বসে কাজ করার সুযোগ (Work from home) :

গ্রাফিক্স ডিজাইনের খুব বড় একটি সুবিধা হলো আপনি বাসায় বসেও এই কাজ করতে পারবেন।একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ,  সাথে ভালো ইন্টারনেট কানেকশন এবং প্রয়োজনীয় কিছু সফটওয়্যার (Software) ব্যাবহার করে আপনি বাসায় বসেই কাজ করতে পারবেন।

৫. চাকরির সুযোগ :

গ্রাফিক ডিজাইনিং এর মাধ্যমে আপনি  বিদেশের বিভিন্ন  কোম্পানিতে ঘরে বসেই কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে (Marketplace) কাজ করতে পারবেন। চাইলে আপনি দেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

৬. বেশি আয়ের সুযোগ:

ইদানিং অনলাইনের প্রায় সব কাজেই গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ ডিজাইনারের সংখ্যা কম। তাই আপনি যদি এই বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে এই সেক্টরে আপনি ভালো অংকের টাকা আয় করতে পারবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের অন্তর্ভুক্ত অনেক ডিজাইন অনেক চড়া দামে মূল্যায়িত হয়ে থাকে। এমন ও কিছু লোগো আছে যার মূল্য লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। বিভিন্ন ই কমার্স কোম্পানি তাদের প্রোডাক্টকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়োগ করে থাকে। এই ক্ষেত্রে খুব ভালো মানের একটি স্যালারি পাওয়া যায়।

আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনে খুব দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে দেশের সরকারি – বেসরকারি চাকরির চেয়ে কয়েক গুন বেশি ইনকাম করতে পারবেন।

৭. উচ্চশিক্ষা বা পুথিগত শিক্ষার প্রয়োজন নেই:

হাতেকলমে গ্রাফিক্স  ডিজাইনের কোর্স করে আপনি দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠতে পারেন। এর জন্য আপনার একাডেমিক লেখাপড়ার প্রয়োজন নেই। এই সেক্টরে কেউ আপনার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখতে আসবে না। আপনার কাজের দক্ষতা দেখেই আপনাকে কাজ দিবে।

৮. ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) বা আউটসোর্সিং ( Outsourcing)  এর সুযোগ :

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফ্রিল্যান্সিং এর অনেকগুলো সেক্টরের মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন অন্যতম। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে  একাউন্ট খুলে আপনি ঘরে বসে দেশের বাইরের কোম্পানিতে কাজ করতে পারেন।

উপরোক্ত কারণের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন এখন এত জনপ্রিয়। দিন দিন এর চাহিদা বেড়েই চলছে।

যেভাবে শিখবেন

গ্রাফিক্স ডিজাইনকে ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে চাইলে অবশ্যই দক্ষ হওয়া প্রয়োজন। গুগোল(Goggle),ইউটিউবে (YouTube) অনেক রিসোর্স আছে তা থেকে আপনি শিখতে পারেন। কিছু কিছু ইউটিউব চ্যানেলে খুব ডিটেইলসে ধারাবাহিক ভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ভিডিও রয়েছে।

এছাড়াও গ্রাফিক্স ডিজাইনের জনপ্রিয়তার কারণে এখন অনেক ইন্সটিটিউট (Institute)  ও ওয়েবসাইট(Website)গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কোর্স শিখিয়ে থাকে। আপনি চাইলে এমন কোনো কোর্স করে নিতে পারেন। রিলেটেডঃ ফ্রিল্যান্সিং কি? মার্কেটপ্লেস, কাজ পাওয়ার উপায়

কিছু অনলাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স :

  • Coursera graphics design course
  • Udemy graphics design course
  • Skillshare graphics design course
Coursera graphics design course
Coursera graphics design course ফ্রিতে করতে Financial aid এ আবেদন করতে হয়।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের মূলনীতি –

গ্রাফিক্স ডিজাইনের কিছু মূলনীতি রয়েছে, যেমন –

  • ব্যালেন্স ( Balance) বা সমতা
  • এম্ফেসাইজ ( Emphasize) বা গুরুত্ব
  • কন্ট্রাস্ট (Contrast) বৈপরিত্য
  • প্রোপোর্শন (Proportion) বা অনুপাত
  • রিদম (Rhythm) বা ছন্দ
  • মুভমেন্ট (Movement)  বা গতিবিধি
  • কালার (Color) বা রঙ
  • স্পেস (Space) বা জায়গা
  • এলাইনমেন্ট ( Alignment) বা সারিবদ্ধকরণ
  • ব্যালেন্স (Balance) বা ভারসাম্য

গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে কতদিন সময় লাগে?

গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। একেকজনের একেকরকম সময় লাগতে পারে। কেউ ৬ মাসে যা আয়ত্ব করতে পারবে,ঠিক ওই জিনিসটাই অন্যজনের শিখতে ৪ মাস বা ১ বছর ও লাগতে পারে। শেখার পেছনে আপনি কতটা সময় দিচ্ছেন এর উপর ও নির্ভর করবে আপনার কাজ শেখার গতি।

প্রয়োজনীয় জিনিস

১.ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ

২. ইন্টারনেট কানেকশন : ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় টুলস, সোর্স সংগ্রহ করা লাগতে পারে। এছাড়াও যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান,  তাহলে তো ইন্টারনেট কানেকশন লাগবেই।

৩. ইংরেজিতে মিনিমাম দক্ষতা : বিদেশি ক্লাইন্টের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ইংরেজি জানা জরুরি। তাছাড়াও  গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য নিমিমাম ইংরেজি জানা জরুরি।

প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার

গ্রাফিক্স ডিজাইনে বেসিক কিছু সফটওয়্যার প্রয়োজন :

১. এডোবি ইলাস্ট্রেটর ( Adobe Illustrator) : গ্রাফিকাল ইলাস্ট্রেশনের জন্য ইলাস্ট্রেটর ব্যাবহার করা ভালো।

২. এডোবি ফটোশপ (Adobe Photoshop) :ছবি বা ইমেজ বেসড (Image/Picture based) কাজের জন্য ফটোশপ উত্তম।

৩. এডোবি ইনডিজাইন  (Adobe Indesign)

৪. এডোবি এক্সডি (Adobe XD) :. UI/UX ডিজাইনের জন্য এই সফটওয়্যারটি সেরা।

৫. এডোবি প্রিমিয়াম প্রো (Adobe Premiere Pro)

৬. এডোবি আফটার ইফেক্ট (Adobe After Effect)

৭. এডোবি লাইটরুম (Adobe Lightroom)

এডোবির অনেক সফটওয়্যার রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করতে পারেন। তবে এই ইলাস্ট্রেটর ও ফটোশপ এই দুটি সফটওয়্যার দিয়ে আপনি বেসিক থেকে শুরু করে এডভান্স প্রায় সব কাজই করতে পারবেন। রিলেটেডঃ ফ্রিল্যান্সিং কি? মার্কেটপ্লেস, কাজ পাওয়ার উপায়

গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ

গ্রাফিক্স ডিজাইন মূলত দুই ভাগে বিভক্ত –

১. স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স (Still image graphics)
  • রাস্টার ইমেজ ( Raster image)
  • ভেক্টর ইমেজ ( Vector image)
  • টাইপোগ্রাফি (Typography)
২.মোশন গ্রাফিক্স ( Motion graphics)
  • এনিমেশন গ্রাফিক্স ( Animation graphics)
  • ভিডিও গ্রাফিক্স ( Video graphics)

অন্তর্ভুক্ত সেক্টরসমূহ

গ্রাফিক্স ডিজাইন মূলত অনেক বড় একটি সেক্টর, গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে আয়া করতে আপনার প্রতিটি বিষয়ে দক্ষ হওয়ার কোন প্রয়োজন নাই, শুধু যেকোন একটি সেক্টরে নিজেকে পারদর্শী করে তুলতে পারলে আপ পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না। চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক গ্রাফিক্স ডিজাইনের অন্তর্ভুক্ত সেক্টরসমূহ কি কি।

বিজনেস কার্ড ডিজাইন
বিজনেস কার্ড ডিজাইন

১.লোগো এন্ড ব্র‍্যান্ড আইডেন্টিটি (logo and brand identity) :

  • লোগো ডিজাইন (Logo design) :

লোগো একটি  ব্র‍্যান্ডের পরিচিতি বহন করে। লোগোর ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে এর দাম কম বেশি হয়ে থাকে। একেকটি লোগো ৫০ ডলার থেকে শুরু করে ১০০০ ডলার বা এর চেয়ে আরো বেশি দামেও বিক্রি হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের লোগো হয়ে থাকে যেমন – ফ্ল্যাট (Flat), 3D,Vintage, Signature, lettering etc.

  • ব্র‍্যান্ড স্টাইল ডিজাইন (Brand style design) :

একটি ব্র‍্যান্ডের প্রয়োজনীয় সব জিনিস এই সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত :

-লেটারহেড (Letterhead)

– এনভেলপ (Envelop)

-বিজনেজ কার্ড (Business card)

  • বিজনেস কার্ড এন্ড স্টেশনারি (Business card and stationary) : বিজনেস কার্ড বা ভিজিটিং কার্ড (Visiting card) ব্যবসা বা ব্র‍্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। ছোট থেকে শুরু করে বড়, প্রায় সব ধরনের ব্যবসায়ই ভিজিটিং কার্ডের বহুল ব্যবহার রয়েছে।
  • ফন্ট ডিজাইন (Font design) :

সাধারণ অক্ষর ছাড়াও কিছুটা ডিজানিং অক্ষর ইদানীং খুবই প্রচলিত। সাধারণ একটি লেখাকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় ফন্ট স্টাইল চেঞ্জ করে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যে ফন্ট ডিজাইনিং নতুন একটি সংযোগ।”Etsy”নামক ওয়েবসাইটে আপনি ফন্ট বিক্রি করে ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারেন।

  • টাইপোগ্রাফি (Typography) :

কোনো একটি বাক্য বা লাইনকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করাটাই টাইপোগ্রাফি  নামে পরিচিত। ক্যালিগ্রাফিও এর অন্তর্ভুক্ত।

২. আর্ট এন্ড ইলাস্ট্রেশন (Art and illustration) :

  • ইলাস্ট্রেটশন (Illustration) :

আকা আকি, ড্রয়িংকে ইলাস্ট্রেশিন বলে।কমিক (Comic),কার্টুন ( Cartoon), স্কেচ(Sketch) ইত্যাদি ও এর অন্তর্ভুক্ত।

  • প্যাটার্ন ডিজাইন(Pattern design) :

নির্দিষ্ট কোনো ডিজাইন ধারাবাহিক ভাবে সাজিয়ে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।

  • পোর্ট্রেইট (Portrait) :
  • কার্টুন ডিজাইন(Cartoon design)
  • ট্যাটু ডিজাইন (Tattoo design)

৩. গেমিং (Gaming) :

  • গেম আর্ট (Game art)
  • গ্রাফিক্স ফর স্টিমারস (Graphics for streamers)

৪. প্যাকেজিং এন্ড কভারস (packaging and covers) :

  • প্যাকেজিং এন্ড লেবেল ডিজাইন (Packaging and label design) : বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রীর ডিজাইন প্যাকেটের ডিজাইন করা হয়।
  • বইয়ের কভার ডিজাইন (Book cover design)
  • অ্যালবাম কভার ডিজাইন (Album cover design) : গানের এলবাম, মুভি বা বিভিন্ন নাটকের প্রচ্ছদের ডিজাইন।
  • পডকাস্ট কভার ডিজাইন (Podcast  cover design)
  • কার র‍্যাপ (Car wrap)

৫. ভিজুয়াল ডিজাইন (Visual design)

  • ফটোশপ এডিটিং (Photoshop editing) : ছবি এডিট, ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ, ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ, টেক্সট রিমুভ, ছবি রিস্টোর সহ আরো অনেক কিছু।
  • প্রেজেন্টেশন ডিজাইন (Presentation design)
  • ইনফোগ্রাফিক ডিজাইন (Info-graphic design) : ছবি সম্বলিত বিভিন্ন লিফলেট, ব্যাবার, পোস্টার – যাতে ছবিসহ লেখা থাকে যাতে কেউ পড়তে না পারলেও ছবি দেখে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
  • ভেক্টর ট্রেসিং (Vector tracing) : ভেক্টর ইমেজকে ট্রেস করে সেটিকে রাস্টার (Raster)  ইমেজে পরিনত করে ইমেজটির মান ভালো করা হয়।
  • রিজিউম ডিজাইন (Resume design)  : CV/জীবনবৃত্তান্ত  (Curriculum vitae),Cover letter etc.

৬. ওয়েব এন্ড এপ ডিজাইন (Web and app design)

  • ওয়েবসাইট ডিজাইন (website design)
  • অ্যাপ ডিজাইন (App design)
  • ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন (UX design -User experience design)
  • ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন (Landing page design)
  • ইমেইল ডিজাইন (Email design)
  • আইকন ডিজাইন (Icon design) : ফোন কম্পিউটার সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে যেসব এপ ব্যবহার করি, তা সংক্ষেপে প্রকাশ করার জন্য কিছু সিম্বল (Symbol) ব্যবহার  করে থাকি, এসব সিম্বলকে আইকন বলে।
  • ওয়েব ব্যানার (Web banner)

৭. আর্কিটেকচার এন্ড বিল্ডিং  ডিজাইন (Architecture and building Design):

  • আর্কিটেকচার এন্ড ইন্টেরিয়র ডিজাইন (Architecture and Interior design)
  • ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইন (Landscape design)
  • বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং (Building engineering)
আর্কিটেকচার এন্ড বিল্ডিং  ডিজাইন
আর্কিটেকচার এন্ড বিল্ডিং  ডিজাইন

৮. প্রোডাক্ট এন্ড ক্যারেক্টার ডিজাইন (Product and character design)

  • ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাক্ট ডিজাইন (Industrial and product design)
  • ক্যারেক্টার মডেলিং (Character modeling)
  • ট্রেড বুথ ডিজাইন (Trade booth design)

৯. প্রিন্ট ডিজাইন (Print design)

  • ফ্লায়ার ডিজাইন (Flyer design )
  • ব্রুশিউর ডিজাইন (Brochure design)
  • পোস্টার ডিজাইন (Poster design)
  • ক্যাটালগ ডিজাইন (Catalog design)
  • মেনু ডিজাইন (Menu design)
  • ইনভাইটেশন ডিজাইন (Invitation design)

১০. ফ্যাশন ডিজাইন (Fashion design)

১১.টি শার্ট ডিজাইন (T-shirt design) :

টি শার্ট ডিজাইন বিক্রি করে আয় করা যায়। এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট হলো –

  • Redbubble
  • Threadless
  • Teespring

১২. জুয়েলারি ডিজাইন (Jewellery design)


জুয়েলারি ডিজাইন নিয়ে একটি সুন্দর ভিডিও টিউটরিয়াল

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস

গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে আপনি দেশের বিভিন্ন অফিসে কাজ করতে পারেন আবার নিজের বাসায় বসে বাইরের দেশেও কাজ করতে পারেন। ঘরে বসে বাইরের দেশে কাজ করার জন্য কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি সরাসরি বিদেশে ক্লাইন্টের সাথে যোগাযোগ ও কাজ করতে পারেন।  চলুন, তেমন ই কিছু মার্কেটপ্লেস ও তার কাজ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক- রিলেটেডঃ ফ্রিল্যান্সিং কি? মার্কেটপ্লেস, কাজ পাওয়ার উপায়

১. ফাইবার ( Fiverr)

www.fiverr.com ফ্রীল্যান্সারদের  মার্কেটপ্লেসের একটি অন্যতম হলো ফাইবার , এইখানে ৫ ডলার থেকে কাজ শুরু হয়। এটি ইসরাইলের একটি কোম্পানি যা বিশ্বব্যাপী প্রসারিত।

এইখানে আপনি একাউন্ট খুলে নিজের কাজের স্যাম্পল সাজাতে পারে। এইখানে কাজ সাজানোর উপাগ হলো গিগ (Gig) তৈরি। ফাইবারে কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই  গিগ তৈরি করতে হবে। গিগগুলো সাধারণত প্যাকেজ আকারে থাকে। একটি গিগে উল্লেখ থাকে- কি কি কাজ, কাজের মূল্য এবং কি কি ফাইল সরবারাহ করা হবে।

www.fiverr.com ওয়েবসাইটে গিয়ে  জয়নে (Join) ক্লিক মেইল আর পাসওয়ার্ড তৈরি করে ফাইবারে প্রবেশ করে সেলার (Seller) মুড অন করতে হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাজের স্যম্পল সম্বলিত গিগ তৈরি করে প্রোফাইল সাজাতে হবে।

ফাইবারের ক্ষেত্রে গিগের বর্ণনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ ।যারা ফাইবারে টপে আছে তাদের বর্ণনাগুলো দেখে ধারণা নিতে পারেন কিন্তু  তাদের গিগ  কপি করবেন না । কপি করলে আপনার একাউন্টি ব্যান (Ban) হয়ে যাবে ।

ট্যাগ এবং কী ওয়ার্ড সঠিকভাবে দেয়ার উপর গিগ র‍্যাংকিং নির্ভর করে। সবকিছু ঠিকভাবে সেট আপ হয়ে গেলে আপনার একাউন্ট লাইভ হয়ে যাবে । এরপর আপনি আপনার কাজ শুরু করতে পারেন।

ফাইভার প্রতি ৫ ডলারে ১ ডলার চার্জ হিসেবে কেটে নিবে অর্থাৎ  আপনি যদি ৫ ডলার ইনকাম করেন তাহলে ৪ ডলার পাবেন। বায়ারের কমপ্লিট ঘোষণা দেয়ার ১৫ দিন পরে টাকা উত্তোলন করা যাবে। ফাইভার থেকে বাংলাদেশে সাধারণত পাইওনিয়ার ডেবিটকার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা উঠাতে পারবেন। ৫০ ডলার জিমা হলে আপনি ব্যংকে উইথড্রো দিতে পারবেন।ব্যাংক ট্রান্সফারে ৩ ডলার করে চার্জ কাটে।

২. ফ্রিল্যান্সার (Freelancer)

www.freelancer.com ফ্রিল্যান্সার – এই ওয়েবসাইটটি অস্ট্রেলিয়ান একটি কোম্পানি। এইখানে প্রতিনিয়তই ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এইখানে ঘন্টা, দিন, মাস হিসেবে কাজ পাওয়া যায়। আপনার প্রোফাইল দেখে পছন্দ হলে ক্লাইন্ট আপনাকে মেসেজ দিবে। এছাড়াও এই ওয়েবসাইটে বিড (Bid) করা যায়।  এতে কন্টেস্ট ও হয়ে থাকে, বায়ার (Buyer) একটি কাজের বিবরনসহ তার বাজেট উল্লেখ করে কাজের পোস্ট করে থাকেন।

এইসব কনটেস্টের একটি নির্ধারিত সময় দেয়া থাকে। এই সময়ের মাঝে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজ সাবমিট করে থাকে। এর মাঝে থেকে বায়ারের যার কাজ পছন্দ হয়ে থাকে, তিনি সেই ফ্রিল্যান্সারকে উইনার (Win) ঘোষণা করেন এবং পূর্ব নির্ধারিত টাকা ফ্রিল্যান্সারের একাউন্টে জমা হয়ে যায়। সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে আপনি টাকা উঠাতে পারবেন।

৩.আপওয়ার্ক (Upwork)

www.upwork.com আপওয়ার্ক (আগে নাম ছিল  ওডেস্ক) একটি বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সিং কোম্পানি। ২০০৩ সালে ওডেস্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আপওয়ার্কে কাজ করতে চাইলে আগে সাইন আপ করতে হবে অর্থাৎ একাউন্ট খুলতে হবে। আপওয়ার্ক এর সাইন আপ পেজ এ প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় তথ্য  দিয়ে ফর্ম ফিল আপ করুন। ইমেইল এবং ফোন নম্বর  ভেরিফাই করুন।

আপওয়ার্ক (Upwork)
আপওয়ার্ক (Upwork) ওয়েবসাইটের ইন্টারফেইস

সব তথ্য সঠিকভাবে দেয়া হলে সাবমিট বাটন চাপুন।এরপর একাউন্ট এপ্রুভ হওয়া পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। আপনার প্রোফাইলে পূর্বে করা কাজের অভিজ্ঞতা বিবরণ সহ লিখুন।ভিউ প্রোফাইল অপশনে আপনার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে আপনার প্রোফাইল ডিজাইন করুন।

ক্লায়েন্টকে কাজের প্রোপোজাল (Proposal)  পাঠাতে আপনার কানেক্টস এর প্রয়োজন হবে। প্রতিটা জবের জন্য বিড করতে ১ টা থেকে ৬ পর্যন্ত কানেক্টস এর প্রয়োজন। প্রজেক্ট বাতিল হলে আপনি আপনার কানেক্টস ফেরত পাবেন।

আপওয়ার্ক এ সাইন আপ করার পর আপনি কিছু  ফ্রি কানেক্টস (Connects) পাবেন। তবে সেগুলো কিছুদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আপনি যদি আপওয়ার্ক এর ফ্রি মেম্বারশিপ প্ল্যান ব্যবহার করে থাকেন, তবে প্রতিটি কানেক্ট এর জন্য আপনাকে ০.১৫ ডলার খরচ করতে হবে।

আপওয়ার্ক থেকে অনেকগুলো পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলন করা যায়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পেওনিয়ার ডেবিট মাস্টারকার্ড, মানিবুকার্স এবং ওয়ার ট্রান্সফার। ডেবিট কার্ডটির মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে অর্থ উত্তোলন করা যায়। এছাড়া ব্যাংক থেকে ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার ও  করা যায়। উপরোক্ত ৩ টি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয়।

এছাড়াও আরো কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে

গুরু (Guru): www.guru.com ,প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯৮ সালেপেনসিলভানিয়ার পিট্‌সবার্গে.

পিপল পার আওয়ার (People per hour): www.peopleperhour.com এটি ২০০৭ এ লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত হয়। পিপল পার আওয়ার এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো “আওয়ারলি” আওয়ারলি হচ্ছে একটি অফার – যেমন আপনি লোগো ডিজাইনের একটি অফার দিয়ে একটি আওয়ারলি তৈরি করলে  ক্লায়েন্ট/বায়াররা  সেটি দেখতে পাবে এবং তাদের প্রয়োজন হলে এটি অর্ডার করবে।এইভাবে আপনি একটি আওয়ারলি তৈরি করেই অনেকগুলো অর্ডার পেতে পারেন।

নাইন্টি নাইন ডিজাইন ( 99designs): www.99designs.com ২০০৮ এ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়।

শেষ কথা

গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমান যুগে বেকারত্বের হার কমাতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন।গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে যেমন দেশে কাজ করতে পারবেন, তেমনি দেশের বাইরেও কাজ করতে পারবেন। আপনার মনের সৃজনশীল ভাব ফুটিয়ে তোলার অন্যতম মাধ্যম হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন।

ধৈর্য্য ও সময় নিয়ে যদি আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে আপনার উজ্জ্বল ক্যারিয়ার আশা করা যেতে পারে। রিলেটেডঃ ফ্রিল্যান্সিং কি? মার্কেটপ্লেস, কাজ পাওয়ার উপায়

Author

Leave a Comment

Scroll to Top