শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা | ২০২৪

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে

Last Updated on 7th April 2024 by Mijanur Rahman

৩৬০ আউলিয়ার দেশ সিলেট, চা বাগানের সবুজ পাতার রাজ্য সিলেট। এমন অনেক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের এই সিলেট যাকে পাশ্চাত্যের লন্ডন নামেও ডাকা হয়। তবে আমরা কি সবাই সিলেটের সব সৌন্দর্যের কথা জানি? আমার মনে হয় আমারা অনেকেই আছি যারা সিলেটের সব সৌন্দর্যের কথা জানি না। তাহলে চলুন আজকে আপনাদের কাছে সিলেটের একটি অতি পরিচিতি কিন্তু সৌন্দর্যের দিক দিয়ে সর্বসাধারনের জানার বাইরে এমন একটা জায়গার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। আর সেটা হলো সিলেটে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যা সংক্ষেপে শাবিপ্রবি বা SUST (Shahjalal University of Science and Technology) নামে পরিচিত।

আমাদের অনেকেরই কৈশোরে বই পড়ার হাতে খড়ি হয়েছে মোহাম্মদ জাফর ইকবালের বই পড়ে। সেই জাফর ইকবাল স্যার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তা কি আপনি জানেন? তিনি সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর একজন শিক্ষক। অবাক হচ্ছেন? সিলেটে অবস্থিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বড় একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি। আজকে তাহলে চলুন জেনে নেই সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যঃ


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় লোকেশন

অবস্থান ও স্থাপত্য কাল

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট শহর হতে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে কুমারগাঁওয়ে ৩২০ একর জমি নিয়ে অবস্থিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় এবং অন্যতম তথ্য প্রযুক্তিসমৃদ্ধ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি। দীর্ঘ সংগ্রাম এবং একটি অবিচ্ছিন্ন আন্দোলনের পর জাতির জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ২৫শে আগস্ট ১৯৮৬ সালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

নিচে শাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হলঃ

১৯৯১ সালের শুরুতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র তিনটি বিভাগ ছিলঃ পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও অর্থনীতি। ১৩ জন শিক্ষক এবং ২০৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রায় ৬ টি অনুষদের অধীনে ২৭ টি বিভাগ রয়েছে এবং দুটি ইনস্টিটিউটও খোলা হয়েছে। এর সাথেই শিক্ষকদের সংখ্যা ৪৮৭ এবং শিক্ষার্থীদের ৯২৬২ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও মাত্র তিনটি বিভাগ নিয়ে গঠিত সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। অনুষদসমূহ হলঃ

  • কৃষি ও খনিজ বিজ্ঞান অনুষদঃ এই অনুষদের অধীনে ১টি বিভাগ রয়েছে।
  • ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদঃ এই অনুষদের অধীনে ৯টি বিভাগ হয়েছে।
  • জীব বিজ্ঞান অনুষদঃ এই অনুষদের অধীনে ২টি বিভাগ রয়েছে।
  • ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদঃ  এই অনুষদের অধীনে ১টি বিভাগ রয়েছে।
  • ভৌত বিজ্ঞান অনুষদঃ এই অনুষদের অধীনে ৬টি বিভাগ হয়েছে।
  • সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদঃ এই অনুষদের অধীনে ৮টি বিভাগ হয়েছে।

এছাড়াও এখানে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ রয়েছে। যেখানে ৮ টি মেডিকেল কলেজের ২৮৪৪ জন শিক্ষার্থী সংযুক্ত আছে।

যেহেতু  সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম একটি গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠানও সেহেতু এখানে গবেষণার জন্য রয়েছে কয়েকটি প্রসিদ্ধ ইনস্টিটিউটঃ 

  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট
  • স্থাপত্য গবেষণা কেন্দ্র
  • কম্পিউটার প্রকৌশল গবেষণা কেন্দ্র
  • পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
  • পরিসংখ্যান গবেষণা কেন্দ্র

ভৌত স্থাপনাসমূহ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ৫টি, প্রশাসনিক ভবন ২টি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করার পরেই এক কিলোমিটার প্রবেশপথ পেরিয়েই পাওয়া যায় গোলচত্বর। গোলচত্বরের পশ্চিমে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন এবং পূর্বে রয়েছে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেঃ

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার ব্যাপারে বেশি প্রাধান্য দেয়। এখানে সকল বিভাগগুলির জন্য একটি সাধারণ কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার আছে যেখানে ৩০০ টি সর্বজনীন সাময়িকী, ৬৯ হাজারেরও বেশি বই, ৬ হাজার হার্ড কপি জার্নাল / সাময়িকী, ১৮০,০০০টি খন্ড এবং ২৩ দৈনিক রয়েছে। যেটি ১৯৯০ সালের দিকে একাডেমিক বিল্ডিং ‘এ’ তে অল্প সংখ্যক বই এবং মাত্র চারটি কক্ষের সাথে শুরু হয়েছিল। এছাড়াও এখানে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নামে একটি বিশেষ কর্নার রয়েছে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন পোস্টার, মানচিত্র, ভিডিও ডকুমেন্টস ইত্যাদি সহ ২০০০ এরও বেশি বই সংগ্রহে রয়েছে

চেতনা ’৭১

বৃহত্তর সিলেটের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ এর ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি  চেতনা ’৭১ নামে পরিচিত। এই ভাস্কর্যটি একাডেমিক ভবন ‘এ’ এর উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত যার উচ্চতা ১২ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। এ ভাস্কর্যটির ডিজাইন করেছেন মোবারক হোসাইন। ২০০৫-০৬ সেশনের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রায় ৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে এটি নির্মিত হয়। ভাস্কর্যটি সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ভিত্তি বেদির ৩ টি ধাপ তৈরি করা হয়েছে হয়েছে লাল ও কালো সিরামিক ইট দিয়ে যা একাডেমিক ভবন গুলোর লাল ইটের সাথে মিল আছে।

কেন্দ্রীয় মিলনায়তন

সিলেট বিভাগের বৃহত্তম মিলনায়তন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন। এই মিলনায়তনের দর্শনার্থী ধারণক্ষমতা ১২০০।

শহীদ মিনার

একটি ছোট পাহাড়ের উপরে অবস্থিত স্মৃতির মিনারটি সবুজ বৃক্ষ দ্বারা বেষ্টিত যা অনেক দর্শনার্থীকেই আকর্ষণ করে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার

আবাসিক হল

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র- ছাত্রীদের আবাসিক সুবিধা অনেক সীমিত। ছাত্রদের ৩টি এবং ছাত্রীদের ২টি মোট পাঁচটি আবাসিক হল রয়েছে। আট হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র দুই হাজার আসন সংখ্যার পাঁচটি আবাসিক হল।

ছাত্রদের হল

  • শাহপরান ছাত্র হল
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র হল
  • সৈয়দ মুজতবা আলী ছাত্র হল
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহপরান ছাত্র হল

 ছাত্রী হল

  • জাহানারা ইমাম ছাত্রী হল
  • বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হল

ইনস্টিটিউট সমূহ

নিচে শাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট সমূহ কি কি তা তুলে ধরা হল।

ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি ( IICT):

বিভিন্ন স্নাতকদের আইসিটিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গবেষণার সুযোগ প্রদান করার লক্ষ্যে ২০০৭ সালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বিদ্যালয়ের প্রথম ইনস্টিটিউট। এর প্রধান কাজ হলোঃ

  • আইসিটিতে সক্রিয়ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য জ্ঞান ভিত্তিক সেবা প্রদান করা। 
  • শিক্ষার্থীদের ধারনাগুলির উন্নতি ঘটিয়ে প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি উদ্যোক্তা, নতুনত্ব এবং এন্টারপ্রাইজের জন্য অন-ক্যাম্পাস পরিবেশ তৈরি করা।  
  • সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় আইসিটি পেশায় অংশগ্রহণে আগ্রহী বা কর্মজীবি ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা।

ইনস্টিটিউট অব মডার্ণ ল্যাঙ্গুয়েজস (আইএমএল)

১৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে ১৯২ তম সিন্ডিকেট সভায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনস্টিটিউট অব মডার্ণ ল্যাঙ্গুয়েজস (আইএমএল) প্রতিষ্ঠিত এবং অনুমোদন করা হয়েছিল। এটির জন্য ১৫ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে ১৩৬ তম একাডেমিক কাউন্সিলে সুপারিশ করা হয়েছে। এর প্রধান কাজ হলোঃ

  • আধুনিক ভাষা (আরবি, বাংলা, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, হিন্দি, ইতালীয়, জাপানি, কোরিয়ান, মালয়, নেপালি, পারস্য, রুশ, সংস্কৃত, সিংহলি, স্প্যানিশ, থাই, তুর্কি, উর্দু), আদিবাসী ভাষা, অতীত ভাষা পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা। কিন্তু বর্তমানে এখানে শুধুমাত্র আরবি, ইংরেজি এবং ফরাসি শুধুমাত্র সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা কোর্স চালু আছে। 
  • ভাষা নিয়ে সচেতনতা তৈরী করা এবং এর প্রচার করা। 
  • ভাষাবিদ পণ্ডিতদের, বিদেশী সেবা কর্মীদের এবং অন্যদের চাহিদা মেটাতে সেবা প্রদান করা যাতে তারা শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রেনিং দিতে পারে। আধুনিক ভাষাগুলিতে দক্ষতা, ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট (বি.এ., এম.এ, এম.ফিল, পিএইচডি, ডি. লিট) অর্জনের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের প্রস্তুত করার জন্য শিক্ষাদান, প্রশিক্ষণ ও নির্দেশিকা প্রদান করা।  

পড়াশোনার মান

মানসম্মত তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি তুলনামূলকভাবে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান উন্নতি একে দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরেছে। এই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার মান বেশ ভাল। ওয়েবম্যাট্রিক্স রাঙ্কিং এ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনেক ভালো অবস্থানেই আছে। একাডেমিক ভাবে বিভিন্ন সহযোগিতার জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অনেকগুলো বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্ত আছে। যেগুলো হলোঃ

  • ইতালির কালাব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
  • চীনের চিংশু বিশ্ববিদ্যালয়।
  • জার্মানির ফ্যাচকশিউল। 
  • ফিনল্যান্ডের তামপেরে ফলিত বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়।
  • জার্মানির কার্লসরুয়ে প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট।
  • তুরস্কের বিলকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়।

এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার অনেক সুবিধা তৈরি হয়। এখানে ১৯৯৬-৯৭ সেশন থেকে পরীক্ষা বছরে ২টি সেমিস্টারে ক্রেডিট পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। শতকরা ৭৫ ভাগ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দুটি ভাষা কোর্স এবং দুটি কম্পিউটার কোর্স নিতে হবে। ভাষা কোর্স দুইটি হলঃ একটি বাংলা এবং অন্যটি ইংরেজী। কম্পিউটার কোর্স দুইটি হলঃ একটি কম্পিউটার শিক্ষার জন্য এবং অন্যটি কম্পিউটার ভাষা শিখার জন্য। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত বাংলায় এবং ইংরেজিতে দুইটি গবেষণা পত্রিকা প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের অন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে তুলনামূলকভাবে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলো একটু উন্নত মানের। এখানের  ল্যাবগুলিতে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে অভিজ্ঞতার উপর জোর দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের সুবিধামত গবেষণা করতে পারে সেইজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে উন্নত মানের সেবা প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলি হলঃ

  • নন লিনিয়ার অপটিক্স
  • ক্লাস্টার কম্পিউটিং ল্যাব
  • ইনফরমেশন রিট্রাইভাল ল্যাব 
  • প্ল্যান্ট জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব
  • মাইক্রোবায়োলজি, ফারমেন্টেশন এবং পরিবেশ জৈব প্রযুক্তি ল্যাব
  • পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশল ল্যাব
  • ফ্লইড মেকানিক্স, জল এবং বর্জ্য পানি শোধনাগার ল্যাব

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অবদান হল বাংলাদেশের একমাত্র সার্চ ইঞ্জিন “পিপীলিকা”। তাছাড়াও শিক্ষার্থীদের আরেকটি অন্যতম অবদান হল ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন মোবাইলের এস এম এসের মাধ্যমে করা। যা ২০০৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অনেক পুরস্কারও লাভ করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান দান করা হয় কিছু লক্ষ্যকে সামনে রেখে। তা হলঃ

  • বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নত গবেষণার পরিচালনা করা।
  • জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার এবং সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে দেশব্যাপী বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান তৈরি এবং প্রচার করা।  
  • শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রশিক্ষণ প্রদান করে ভবিষ্যতের নেতৃত্বের জন্য দক্ষ বৈজ্ঞানিক হিসেবে তৈরি করা।

তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা অনুকরণ করার জন্য, শিক্ষার্থীরা শিল্পকারখানার মত পরিবেশে কাজ করার সুযোগ প্রদানের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের মধ্যে শিল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৮ ই ফেব্রুয়ারী ২০০৭ সেন্টার ফর রিসার্চ টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্সি (সিআরটিসি) গবেষণা কেন্দ্র চালু করে।

যেভাবে ভর্তি হবেন

এই বছর থেকে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ২০টি সাধারণ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে। সাধারন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্যে ১টি করে পৃথক ৩টি পরীক্ষা।

ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমে শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে আবেদন করতে হবে। প্রাথমিকভাবে আবেদন করার যোগ্যতা হলঃ

  • A ইউনিট – বিজ্ঞান
    • ২০১৭ ও ২০১৮ সালের এসএসসি/সমমান এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের উভয় পরীক্ষায় (এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমান) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ সহ (৪র্থ বিষয়সহ) সর্বমােট জিপিএ ৮.০০ থাকতে হবে।
    • সাধারন শিক্ষাবাের্ডের সাধারণত বিজ্ঞান শাখাসহ ভােকেশনাল (এইচএসসি) এবং মাদ্রাসা বাের্ড বিজ্ঞান শাখা হিসাবে বিবেচিত হবে।
  • B ইউনিট – মানবিক
    • ২০১৭ ও ২০১৮ সালের এসএসসি/সমমান এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের উভয় পরীক্ষায় (এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমান) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ সহ (৪র্থ বিষয়সহ) সর্বমােট জিপিএ ৭.০০ থাকতে হবে।
    • সাধারন শিক্ষাবাের্ডের সাধারণত মানবিক শাখাসহ মিউজিক, গার্হস্থ্য অর্থনীতি এবং মাদ্রাসা বাের্ড (সাধারন, মুজাব্বিদ) মানবিক শাখা হিসাবে বিবেচিত হবে।
  • C ইউনিট – ব্যবসায় শিক্ষা
    • ২০১৭ ও ২০১৮ সালের এসএসসি/সমমান এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালের এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের উভয় পরীক্ষায় (এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমান) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ সহ (৪র্থ বিষয়সহ) সর্বমােট জিপিএ ৭.৫০ থাকতে হবে
    • সাধারন শিক্ষাবাের্ডের সাধারণত বাণিজ্য শাখাসহ ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিস, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (এইচএসসি) এবং ডিপ্লোমা ইন কমার্স বাণিজ্য শাখা হিসাবে বিবেচিত হবে। জিসিই O এবং A লেভেল এর যোগ্যতা ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে দেখুন ।
শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস
বৃষ্টির দিনে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস (ফটো শাবিপ্রবি ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া)

পরীক্ষার্থী বাছাই পদ্ধতি

সর্বোচ্চ ৬টি মানদন্ড ব্যবহার করে সকল শাখায় প্রাথমিক আবেদনকারীদের মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হবে। অর্থাৎ নিচের মানদন্ড দেখেই চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হবেঃ

  • জিপিএ (৪র্থ বিষয়সহ) এইচএসসি ৬০% +এসএসসি ৪০%
  • নম্বর (৪র্থ বিষয়সহ) এইচএসসি ৬০% +এসএসসি ৪০%
  • বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এইচএসসি পদার্থ বিজ্ঞানের জিপি। বানিজ্য ও মানবিক শাখার জন্য এইচএসসি বাংলার জিপি।
  • বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এইচএসসি পদার্থ বিজ্ঞানের নম্বর। বানিজ্য ও মানবিক শাখার জন্য এইচএসসি বাংলা নম্বর।
  • বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এইচএসসি রসায়নের জিপি। বানিজ্য ও মানবিক শাখার জন্য এইচএসসি ইংরেজীর জিপি। 
  • বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এইচএসসি রসায়নের নম্বর। বানিজ্য ও মানবিক শাখার জন্য এইচএসসি ইংরেজীর নম্বর।

পরীক্ষার মান বন্টন

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা মোট ১০০ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এবং সকল ইউনিটের পরীক্ষা ১.০০ ঘন্টার মধ্যেই হবে।

  • A ইউনিট – বিজ্ঞানঃ আবশ্যিক বিষয়ঃ পদার্থবিজ্ঞান-২০, রসায়ন-২০, বাংলা-১০, ইংরেজী-১০। মোট- ৬০। ঐচ্ছিক ( যে কোন দুইটি): গণিত-২০, জীববিজ্ঞান-২০, আইসিটি-২০। মোট- ৪০। 
  •  B ইউনিট – মানবিকঃ বাংলা-৪০, ইংরেজী-৩৫, আইসিটি-২৫। মোট- ১০০। 
  • C ইউনিট – ব্যবসায় শিক্ষাঃ  বাংলা-১৩, ইংরেজী-১২, আইসিটি-২৫, হিসাববিজ্ঞান-২৫, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা-২৫। মোট- ১০০।

যেভাবে শাবিপ্রবি আসবেন

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হলে প্রথমে আপনাকে সিলেট আসতে হবে। ঢাকা থেকে সড়কপথ, রেলপথ ও আকাশ পথে সাধারণত সিলেট যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

  • রেলপথে ঢাকা থেকে সিলেটঃ ঢাকার কমলাপুর ও ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন ৩টা এবং রাত ৯.৫০টায় ট্রেন ছাড়ে সিলেটের উদ্দেশে। ট্রেনে গেলে রাতের উপবন এক্সপ্রেসে যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। ট্রেনের ভাড়া সাধারণত প্রকারভেদে ১২০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেহেতু ঢাকা হতে রেলপথে সিলেটের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার সেহেতু ট্রেনে যেতে আপনার সময় লাগতে পারে ৭-৮ ঘণ্টা।
  • সড়কপথে ঢাকা থেকে সিলেটঃ সিলেট ঢাকা থেকে বাসেও যাওয়া যাবে। ঢাকা হতে সিলেট এর  সড়ক পথের দূরত্ব ২৪১ কিলোমিটার। বাসে যেতে চাইলে অনেক বাস আছে। এর মধ্যে শ্যামলি, হানিফ, সোহাগ, ইউনিক, গ্রীন লাইন উল্লেখযোগ্য। ভোর থেকে শুরু করে রাত ১২.৩০টা পর্যন্ত সব বাস পাবেন। বাস ভাড়া ননএসি ৩০০/৩৫০ টাকা এবং এসি ৯০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাসে যেতে সময় লাগবে ৪ থেকে ৪.৩০ ঘণ্টা। 
  • আকাশ পথে ঢাকা থেকে সিলেটঃ আকাশ পথে সিলেট যেতে ৪০/৪৫ মিনিট লাগে। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার, এবং ইউএস-বাংলাতে করে সহজে সিলেট যাওয়া যাবে। বর্তমানে 30 টির বেশী ফ্লাইট ঢাকা-সিলেট রুটে যাতায়াত করে। এখানে ভাড়া সর্বনিম্ন ২৬৯৯ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০০০ টাকা লাগবে।
  • নৌপথে ঢাকা থেকে সিলেটঃ এছাড়াও অপ্রচলিত মাধ্যম হিসেবে নৌপথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে কেবলমাত্র সিলেট, শেরপুর ও আজমেরীগঞ্জ ছাড়া অন্য কোনো এলাকার সাথে ঢাকা থেকে বা সিলেট শহর হতে সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না।

সিলেট শহর থেকে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ কিলোমিটার দূরে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের কুমারগাঁওয়ে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে লোকাল বাস অথবা সিএনজি অটো রিকশায় আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন।

থাকা ও খাওয়া

সিলেটে থাকার জন্য অনেক ভালো মানের হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলঃ

  • হোটেল ইস্টার্ন গেইট এন্ড পানাহার রেস্টুরেন্ট, 
  • হোটেল সুপ্রিম, 
  • হোটেল আজমীর, 
  • হোটেল বাহারাইন রেসিডেনসিয়াল, 
  • গ্রিনল্যান্ড হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, 
  • হোটেল গুলশান, 
  • হোটেল দরগা ভিউ, 
  • হোটেল সিটি লিঙ্ক ইন্টারন্যাশনাল, 
  • হোটেল কুরাইশি রেসিডেন্স, 
  • হোটেল স্টার প্যাসিফিক

এইসব ছাড়াও আরো কিছু ভালো ভালো মানের হোটেল আছে। স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের আলাদা আলাদা ক্যান্টিনে আপনি ভাল মানের খাবার পাবেন।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের পিএইচডি ডিগ্রী দানকারী ৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি ধীরে ধীরে সকল বাধা অতিক্রম করে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। তাই আশা করা যায় সুন্দর সবুজে ঘেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি খুব দ্রুত বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে।

নোটঃ এই লেখায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নেওয়া হয়েছে শাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে, উইকিপিডিয়া থেকে এবং সরকারি অনেক বিজ্ঞপ্তি থেকে। লেখারটির মধ্যে কোন ধরনের তথ্যগত ভুল হয়ে থাকলে ভুল সংশোধনের জন্য সরাসরি যোগাযোগ করুন আমাদের Contact পেইজে। আমরা তথ্যগুলো যাচাই করে যত তারাতাড়ি সম্ভব আর্টিকেলটি আপডেট করে দিবো।

বিঃদ্রঃ এই ব্লগের প্রত্যেকটা ব্লগ পোস্ট Sylhetism ব্লগের নিজস্ব ডিজিটাল সম্পদ। কেউ ব্লগের কোন পোস্ট কিংবা আংশিক অংশ ব্লগের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কপি পেস্ট করে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার অধিকার রাখে। এবং অবশ্যই কপিরাইট ক্লাইম করে যে মাধ্যমে এই ব্লগের পোস্ট প্রকাশ করা হবে সেখানেও অভিযোগ সাবমিট করা হবে।

ধন্যবাদ, ব্লগ কর্তৃপক্ষ।

Author

Leave a Comment

Scroll to Top