ম্যানপাওয়ার কার্ড কি? কিভাবে পাবেন? সুবিধা কি? | ২০২৪

ম্যানপাওয়ার কার্ড

Last Updated on 18th September 2024 by Mijanur Rahman

আমাদের দেশ থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ সুন্দর ও উজ্জল ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য বিদেশে পাড়ি  জমান। বিদেশে পাড়ি জমানোর বেশির ভাগ ই শ্রমিক। এই শ্রমিকদের বড় একটা অংশ দালালের মাধ্যমে বিদেশ গিয়ে প্রতারিত হয়ে থাকে। বৈধ ভাবে বিদেশ না যাওয়ার কারণে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। বিদেশে গিয়ে কোন সমস্যায় পড়লেও সরকারি কোন সুবিধা তারা সহজে পায় না।

তাই কর্মী তথা ওয়ার্ক ভিসায় যারা বিদেশে যাবে তাদের বৈধতা নিশ্চিত করতে ও তাদের সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে এই ম্যানপাওয়ার কার্ড প্রচলন করা হয়।  ম্যানপাওয়ার কার্ড ছাড়া কোন শ্রমিক বৈধ ভাবে বিদেশ যেতে পারবে না। এখানে আমরা জেনে নিবো ম্যান পাওয়ার কার্ড কি? এটি কিভাবে পেতে হয় এবং এর প্রয়োজনীয়তা কী কী।

ম্যানপাওয়ার কার্ড

ম্যানপাওয়ার কার্ড হলো বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কাজের জন্য যাওয়ার অনুমতি পত্র। যারা কাজের জন্য বিদেশে যান তাদের কে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এর নিকট হতে একটি সার্টিফিকেট বা অনুমতিপত্র নিতে হয়। মূলত বিদেশ যাওয়ার আগে প্রতিটা শ্রমিকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এর অধীনে থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। প্রশিক্ষণ শেষে উক্ত সংস্থা হতে ম্যান পাওয়ার কার্ড তথা BMET কার্ড নিতে হয়। BMET বা BUREAU OF MANPOWER EMPLOYMENT AND TRAINING হলো প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে বিদেশগামী শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করা হয়। যাতে করে তারা বৈধ ভাবে বিদেশ গিয়ে দেশে রেমিট্যান্স অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে। 

এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে ও তাদের সামগ্রিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চত করতে দেশে ৪২ জেলায় রয়েছে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস। এছাড়াও দেশে রয়েছে ৭০ টি কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, ৬টি মেরিন  ইন্সটিটিউট, ৩টি শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এগুলো থেকে প্রশিক্ষণ শেষে শ্রমিককে বিদেশ যাওয়ার সার্টিফিকেট বা ম্যানপাওয়ার কার্ড দেয়া হয়।

ম্যান পাওয়ার কার্ড
ছবিঃ ম্যান পাওয়ার কার্ড বা BMET কার্ডের নমুনা।

ম্যান পাওয়ার কার্ড ও বিএমইটি কার্ড

অনেকে ম্যানপাওয়ার কার্ড ও বিএমইটি (BMET ) কার্ড কে আলাদা মনে করেন, কিন্তু এই দুটো একই । ম্যান পাওয়ার কার্ড জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে প্রশিক্ষণ এর পর নিতে হয়। যা BMET কার্ড নামে স্বীকৃত। এর পূর্ণরূপ হলো BUREAU OF MANPOWER EMPLOYMENT AND TRAINING

কার্ডের প্রয়োজনীয়তা

একজন শ্রমিককে বৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য ম্যান পাওয়ার কার্ড দরকারি। এই কার্ড পেতে হলে একজন শ্রমিকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সুতরাং একজন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শ্রমিক এ কার্ড পেয়ে থাকে। আর এক কার্ড বিভিন্ন ক্ষেত্রে দরকার পরে। ম্যান পাওয়ার কার্ড কেনো দরকারি তা নিচে দেয়া হলো।

  • বৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার জন্য ম্যানপাওয়ার কার্ড দরকারী। এই কার্ড ছাড়া কোন শ্রমিক বৈধভাবে বিদেশ যেতে পারবে না।
  • এই কার্ড প্রমাণ করে যে বিদেশগামী নাগরিক তার প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাই নিজেকে দক্ষ শ্রমিক প্রমান করার জন্য এই কার্ড দরকারী।
  • ম্যানপাওয়ার কার্ডধারী বিদেশগামী শ্রমিকের সকল তথ্য সরকারী তথ্যভান্ডারে জমা থাকে। তাই সেখানে তার যাবতীয় কার্যকলাপ বাংলাদেশ সরকারে নজরে থাকে । তিনি কোন বিপদের সম্মূখীন হলে তাকে সহজেই চিহ্নিত করা যায় এবং তৎক্ষনাত সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে। তাই বিদেশগামী শ্রমিকদের তথ্য হালনাগাদ এর জন্য BMET কার্ড অবশ্যই দরকারী।
  • অনেক সময় দেখা যায় বিদেশে কর্মরত অবস্থায় শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তখন মৃত্যুর পরে তার দায়িত্ব সরকারের উপর পড়ে। সরকার তার দেহ দেশে স্থানান্তরের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পাদন করে। এজন্য ম্যান পাওয়ার কার্ড অবশ্যই দরকরী।
  •  কার্ড ধারী যদি বিদেশে গিয়ে কোন জটিলতার সম্মুখীন হন তখন প্রবাসী বাংলাদের দূতাবাসে এই কার্ড দেখিয়ে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।  এই কার্ডধারী যেহেতু বৈধভাবে বিদেশে কাজ করার জন্য এসেছে সেহেতু সেখানে তিনি কোন জটিলতায় পড়লে দূতাবাসের মাধ্যমে সরকার তাকে সে জটিলতা থেকে উত্তরণের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম করে থাকে। এই কার্ড ছাড়া কোন শ্রমিক সহজে জটিলতা থেকে মুক্তি পাবে না। এমনকি দূতাবাস চাইলেও বিদেশে তাকে আন্তরিক ভাবে সহায়তা করতে পারবে না। কারণ এই যার নেই সে অবৈধ ভাবে কাজ করার জন্য বিদেশে এসেছে। তাই অবৈধ কাউকে সহযোগিতা করার এখতিয়ার সরকারের থাকবে না।
  •  কোন শ্রমিক বিদেশে কর্মরত অবস্থায় যদি অসুস্থ হয় তখন তার দায়িত্ব সরকার নেয়  এবং সরকারের নির্দেশনা মতো তার চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে দেশে ফেরত আনার সকল প্রক্রিয়া সরকার করে থাকে।
  • বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঋণ নেয়ার জন্য অবশ্যই ম্যান পাওয়ার কার্ড তথা BMET স্মার্ট কার্ড ধারী হতে হয়।  এই কার্ডধারী বিদেশ যাওয়ার জন্য সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। যা  এই কার্ড ছাড়া সম্ভব নয়।

সুবিদা

বিদেশে কর্মরত একজন্য শ্রমিকের জন্য ভরসার নাম ম্যান পাওয়ার কার্ড। বাংলাদেশ থেকে একজন নাগরিক যখন অন্য দেশে কাজ করার জন্য যান তখন তার সব দায়িত্ব এবং তার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। কারণ এই প্রবাসীরা দিনরাত কষ্ট করে দেশের জন্য রেমিট্যান্স পাঠায়। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশ যাওয়ার পূর্বে তাকে নানা বিধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জানশক্তিতে রূপান্তর করতে ম্যান পাওয়ার কার্ড। এই কার্ডধারী অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকে। তারা দেশের সম্পদ হিসেবে বিদেশে যান। তাই ম্যান পাওয়ার কার্ডধারীকে সরকার থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়।  নিচে ম্যান পাওয়ার কার্ড এর সুবিধা দেয়া হলো,

  • আপনি দালালদের খপ্পর থেকে মুক্তি পাবেন। প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে হাজার হাজার নাগরিক দালালের মাধ্যমে বিদেশে যেতে গিয়ে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে। অনেকে আবার অবেধ পথে বিদেশ গিয়ে সে দেশের জেল হাজতে পচে মরে। তাই ম্যান পওয়ার কার্ড থাকলে দালালের খপ্পর থেকে মুক্তি পাবেন।
  • অল্প খরচে সরকারী ভাবে বিদেশ যেতে পারবেন।
  • আপনার দক্ষতার যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। ম্যান পাওয়ার কার্ড পাওয়ার পূর্ব-শর্ত হলো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা । আপনি যে কাজে বিদেশ যাবেন সরকার থেকে আপনাকে সে কাজের উপর বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া আপনাকে কাজের ব্যাপারেও বিদেশে অবস্থানের জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিবে। যার মাধ্যমে আপনি যথাযথ ভাবে বিদেশে অবস্থান  করতে পারবেন।
  • এই কার্ডের মাধ্যমে আপনার সকল তথ্য বাংলাদেশ সরকারের ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকবে। এই তথ্যের দ্বারা আপনাকে চিহ্নিত ও আপনার খেয়াল রাখবে সরকার। আপনার কোন সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক দূতাবাস আপনাকে সাহায্য করবে।
  • এই কার্ডধারীদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সঠিক তথ্য সর্বরাহ করা হয়। বৈধ রিক্রটিং এজেন্সীর তথ্য পাবেন। যাতে করে আপনি প্রতারণার স্বীকার না হন। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানী যারা বেসরকারি ভাবে বিদেশে লোক নিয়োগ করে তাদের সঠিক তথ্য দেয়া হবে আপনাকে।
  • আপনি যদি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোন রিক্রটিং এজেন্সী থেকে প্রতারিত হন তবে সরসরি মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করতে পারবেন। মন্ত্রণালয় আপনার সে অভিযোগ আমলে নিয়ে তা তদন্তে করে করে সুষ্ঠ সমাধান নিশ্চিত করবে।
  • কর্মসংস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আপনার যোগ্যতা অনুসারে আপনাকে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বিদেশ পাঠানো হবে। এছাড়া শ্রমবাজারের বিভিন্ন তথ্য প্রচার করে আপনার বিদেশে যাওয়ার পথ সুগম করা হবে। তাই এসব সুবিধা পেতে অবশ্যই ম্যান পাওয়ার কার্ড লাগবে।
  • কার্ডধারী যদি বিদেশে অবস্থানকালে মারা যান তবে তার মৃতদেহ দেশে আনার যাবতীয় প্রক্রিয়া সরকার করবে। তার লাশ দেশে এনে তার পরিবারের নিকট পৌঁছে দিবে। বিদেশে মৃত্যুবরণকারী প্রবাসী শ্রমিকের  যে সকল ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা তা নিশ্চিত করবে। এছাড়াও কোম্পানীর নিকট তার যাবতীয় বকেয়া পাওনা, ইন্সুরেন্স আর্থিক অনুদান প্রাপ্তির জন্য দপ্তর সরাসরি সহযোগিতা কররে। এছাড়া লাশ সনাক্তকরণ পরিবহন  সহ যাবতীয় কাজ করবে মন্ত্রণালয় থেকে। সাথে সাথে লাশ বিমান বন্দর থেকে গ্রহণ এবং পরিবারের কাছে  স্থানরকরণ ও পরিবহন খরচবাবদ ৩৫,০০০/- টাকা আর্থিক সহয়তা প্রদান করে থাকে।
  • বিদেশ থেকে ফেরত আসার কর্মীদের জন্য  কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। তাদের ব্যবসা বাণিজ্য  পরিচালনা করার জন্য দপ্তর থেকে পরামর্শ প্রদান করা হয়। যাতে তারা তাদের কষ্টের আয়ের সুষ্ঠ ব্যবহার  নিশ্চিত করতে পারে। এছাড়া বেকার প্রবাসীদের  রেজিস্ট্রেশন এবং শূন্য পদের  বিপরীতে তাদের কাজের ব্যবস্থা করা হয়।

সর্বোপরি একজন বিদেশগামী  বৈধ রেমিট্যান্স যোদ্ধার যাবতীয় সমস্যার সমাধান, সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ম্যান পাওয়ার কার্ড অমূল্য। এই কার্ডের মাধ্যমে আপনি নিরাপদ উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এর নিশ্চয়তা পাবেন।

কার্ড পাওয়ার উপায়

ম্যান পাওয়ার কার্ড করার প্রথম পর্যায় হলো রেজিস্ট্রেশন করা। এর জন্য আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।  দেশে থাকা বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সীগুলো বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য রাখে। তারা বিভিন্ন কোম্পানির ডিমান্ড অনুযায়ী কর্মীর খোঁজ করেন  এবং চাহিদার বিপরীতে আবদেন করা প্রার্থীদের যাচাই বাছাই করে থাকে। এই সব কাজ মূলত মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে থেকে হয়ে থাকে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষ এজন্সিগুলো তাদের বাছাই করা প্রার্থীদেরকে ভিসা দেয়। এর পর উক্ত কর্মী নিজের পাসপোর্ট, ভিসা ও প্রয়োজনীয় কাজগপত্রসহ জনশক্তি  কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে ট্রেনিং গ্রহণ করে ট্রেনিং এর সার্টিফিকেট নিতে হবে। সার্টিফিকেট সহ বাকি সকল কাগজ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণায়ে জমা দিয়ে ফিঙ্গার দেয়া সম্পন্ন করতে হবে । এর পর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সে কর্মীকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বিদেশ যাওয়ার ছাড়পত্র হিসেবে ম্যান পাওয়ার কার্ড অর্থাৎ BMET স্মার্ট কার্ড প্রদান করবে।

আপনি এজেন্সির সহায়তা ছাড়াও ম্যান পাওয়ার কার্ড নিতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রশনের পরে আপনাকে  চাকরী প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত করে পরিচয় প্রত্র প্রদান করা হবে। এই রেজিস্ট্রেশন ছাড়া আপনার কোন তথ্য ডাটাবেজে থাকবে না। রেজিস্ট্রশনের পরে আপনি যখন কোন কাজের জন্য নির্বাচিত হবেন তখন আপনাকে জনশক্তি  কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে নির্দিষ্ট ফরম পূরন করতে হবে এবং কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। কার্ড প্রাপ্তির জন্য আপনাকে ভ্রমণকৃত দেশ অনুযায়ী ১০০ থেকে ২০০০ টাকা খরচ করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, এই খরচ আপনার বিদেশ ভ্রমণের জন্য নির্ধারিত খরচের মধে অন্তর্ভূক্ত।

ম্যানপাওয়ার রেজিস্ট্রেশন

ম্যান পাওয়ার কার্ডের জন্য বিদেশগামী সকল কর্মীকে ৩ দিনের প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং । অবশ্যই করতে হবে। এই প্রশিক্ষণের মধ্যে প্রার্থীকে বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া  হবে। প্রথমে   ২০০/- টাকা ভর্তি ফি জমা দিতে হবে। তার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস বিকাশ/রকেট/ শিওর ক্যাশ/নগদ এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে। জমা দেয়ার পরে নিকটস্থ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে না।

রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া

  1.  মোবাইলের ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিবেন।
  2. এরপর নিকটস্থ ডিইএমও  অথবা চিটিসিতে গিয়ে  রেজিস্ট্রেশন করে  ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হবে।
  3.  ট্রেনিং শেষে রেজিস্ট্রেশন কার্ড গ্রহণ করবেন।
  4.  ডিইএমও অথবা টিটিসিতে আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করবেন।

রেজিস্ট্রেশন এর যোগ্যতা

  • কমপক্ষে ৬ মাসের মেয়াদ সহ বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  • নিজের মোবাইল থাকতে হবে।
  • কোন বিষয়ে দক্ষতা থাকলে দক্ষতার প্রমাণ করতে সনদ প্রর্দশন করতে হবে।
  • বিদেশেগামী কর্মীদের বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বছর হতে হবে। যে সকল নারী কর্মীদের মধ্যে যারা গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করতে  যাবেন তাদের ক্ষেত্রে বয়স ২৫-৪৮ হতে হবে। তবে অন্যান্য দেশ ও পেশার ক্ষেত্রে ১৮ বছর হলেই হবে।

অনেক কর্মী প্রথমে ভিসা নিয়ে প্রশিক্ষণ করেন আবার অনেকে প্রশিক্ষণ শেষে ভিসার জন্য বিভিন্ন   এজেন্সীর সাথে যোগাযোগ করেন।

ম্যানপাওয়ার কার্ড চেক

ম্যানপাওয়ার কার্ড চেক করার জন্য আমাদের এই BMET কি? কিভাবে বিএমইটি স্মার্ট কার্ড পাবেন? পোস্টটি পড়তে পারেন, অথবা নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন।


ম্যানপাওয়ার কার্ড চেক

প্রয়োজনীয় ডুকুমেন্টস

ম্যানপাওয়ার কার্ডের জন্য যা লাগবে তা হলঃ

  • ফিঙ্গারপ্রিন্ট -ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ জমা দিতে ।এর জন্য আপনার অতিরিক্ত কোন অর্থ লাগবে না।
  • অঙ্গাকারপত্র– আপনি যদি নিজে বা কোন আত্মীয় স্বজনের মাধ্যেমে ভিসা সংগ্রহ করে থাকেন তবে অনলাইন থেকে ১৫০ টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়ালস্ট্যাম্পে কাজের বিবরণ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি উল্লেখ করে এবং আপনি নিজে ভিসা সংগ্রহ করেছেন এ মর্মে একটি ” অঙ্গীকারনামা তৈরী করবেন। এবং সেটা নিয়ে অফিসে জমা দিবেন। এজেন্সির মাধ্যমে হলে প্রয়োজন নেই।
  • অনাপত্তিপত্র– এখানে আপনার ও আপনার পরিবারের অনাপত্তিপত্র অফিসে জমা দেয়া লাগবে। অলনলাইন থেকে অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করে তা পূরণ করে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কাগজে প্রিন্ট করতে হবে।
  • কল্যাণ ফি– প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ তহবিলের জন্য কল্যাণ ফি জমা দেওয়া লাগবে। ভিসা সত্যায়িত করা থাকলে ১০০০ অন্যথায় ১৫০০ টাকা কল্যাণ ফি জমা দেয়া লাগবে।

এছাড়াও ম্যান পাওয়ার কার্ড পাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন কার্ড, পাসপোর্টের প্রথম ৬ পৃষ্ঠার ফটোকপি (মেয়াদ থাকতে হবে) , ভিসার সত্যায়িত কপি,চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, ( উভয়ই দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করতে হবে), বিএমইটি এর ব্রিফিং ছাড়পত্র এইগুলো অবশ্যই জমা দিতে হবে। এসব কিছু চেক করার পরে আপনাকে আইডেন্টিটি অনুসারে একটি টোকেন দিবে। যার মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে ম্যান পাওয়ার কার্ড সংগ্রহ করবেন।

কার্ড হারিয়ে গেলে

ম্যানপাওয়ার কার্ড হারিয়ে গেলে আপনি খুব সহজেই সেটা ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। ডাউনলোড করার প্রক্রিয়া হলো,

  • ১. প্রথমে আপনার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জানতে হবে। যদি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার না থাক তবে, http://www.old.bmet.gov.bd/BMET/generalreports এই ওয়েব সাইটে গিয়ে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সার্চ করতে হবে। সার্চ করলেই পরবর্তী পেজে আপনার রেজিস্ট্রশন নাম্বার সহ যাবতীয় তথ্য দেখাবে। সেখান থেকে সেটা নোট করতে হবে।
  • রেজিস্ট্রেশন নাম্বার পেয়ে গেলে http://www.old.bmet.gov.bd/BMET/downloadRegCard এই সাইটে গিয়ে ট্রাকিং নাম্বারের বক্সে রেজিস্ট্রশন নম্বর দিয়ে ক্যাপচা পূর্ণ করতে হবে।
  • ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করলেই অনলাইন থেকে সরাসরি আপনার তথ্যসহ কার্ড ডাউনলোড হবে। সেটা পিন্ট করে নির্দিষ্ট অংশ লেমোনেটিং করে ব্যবহার করতে পারবেন।

কার্ড সংশোধন

আপনার ম্যানপাওয়ার কার্ডে যদি কোন ভুল থেকে থাকে তবে আপনি তা সংশোধন করে নিতে পারবেন খুব সহজে। তার জন্য আপনাকে গুগল প্লে-স্টোর থেকে  আমি প্রবাসী এপটি ডাউনলোড করে নিবেন। তারপর আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে লগইন করে বিভিন্ন অপশন দেখবেন। সেখান থেকে অ্যাপ্লিকেশন অন গোয়িংএ ক্লিক করে আপনার সকল তথ্য দেখতে পাবেন। সেখান থেকে যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান তা ইডিট করে দিবেন। এটি শুধু যারা অনলাইনে ম্যান পওয়ার কার্ড বানিয়েছেন তাদের জন্য। তবে অনলাইন ছাড়া যারা করেছেন তারা জন্য নতুন কার্ড ইস্যু করতে পারবেন। ভুল যদি আপনার হয়ে থাকে তবে ৮০ টাকা পে-অর্ডার করে অনলাইন থেকে আবেদনপত্র পূরণ করে তা সংশ্লিষ্ট অফিসে পরিচালক( বহির্গমন) বরাবর দরখাস্ত করতে হবে। তবে কর্তৃপক্ষ ভুল করলে আপনার টাকা লাগবে না।

Ami Probashi app
Ami Probashi app

শেষ কথা

বৈধভাবে কাজের জন্য বিদেশ গেলে অবশ্যই ম্যানপাওয়ার কার্ড লাগবে। ম্যান পাওয়ার কার্ড আপনাকে নিরাপদ প্রবাস জীবনের নিশ্চয়তা দেয়। তাই দালালের খপ্পরেরে না পরে সরকারি নিয়ম অনুসারে ম্যানপাওয়ার কার্ড করে বিদেশ গিয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করুন। ত বন্ধুরা ম্যানপাওয়ার কার্ড কি? ম্যানপাওয়ার কার্ড কিভাবে পাবেন? ম্যানপাওয়ার কার্ড এর সুবিধা কি? এই লেখাটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থেকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আজকের মত এখানেই বিদায়।

Author

Leave a Comment

Scroll to Top