আয়াতুল কুরসির আরবি ও বাংলা উচ্চারণ | ২০২৪

আয়াতুল কুরসি

Last Updated on 15th July 2024 by Mijanur Rahman

সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক মহান স্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য যিনি বিশেষ দয়া করে আমাদেরকে তরজমা, টীকা, পূর্ণাঙ্গ শব্দসূচী ও বিষয়কোষসহ আল কুরআন প্রকাশের তৌফিক দান করেছেন। দরুদ ও সালাম আমাদের প্রিয় নবী মানবতার মুক্তিদূত হযরত মুহাম্মাদ সা. এর প্রতি যার উপর নাযিলকৃত সর্বশেষ আসমানীগ্রন্থ আল কুরআনের মাধ্যমে পথহারা মানুষ সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছে।

মানবজাতির দুনিয়া ও আখিরাতের সার্বিক কল্যাণ ও মুক্তির জন্য নাযিল হয়েছে সর্বশেষ আসমানীগ্রন্থ আল কুরআন; নিশ্চিতভাবে যা সম্পূর্ণ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে। দুনিয়া ও আখিরাতের সার্বিক কল্যাণ ও মুক্তির জন্য নির্ভুল এ আসমানীগ্রন্থের নির্দেশনা অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ও কল্যাণকামী মানুষের একান্ত কর্তব্যই হল পবিত্র কুরআনের আলোকে নিজের জীবনকে গড়ে তোলা। সে পবিত্র কোরআনের সুরা আল বাকারাহ এর একটি আয়াত “আয়াতুল কুরসি” নিয়ে আজকের লেখা।

এই পোস্টে আমি Aitul Kursi Bangla (বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ ও আরবি উচ্চারণ তুলে ধরবো) তার আগে দেখে নেওয়া যাক আয়াতুল কুরসি কি এবং আল-বাকারাহ সুরার নামকরণ কিভাবে হলঃ

আয়াতুল কুরসি

আয়াতুল কুরসি হল আল-কোরানের সবচেয়ে বড় সূরা আল বাকারার একটি আয়াত, আল বাকারা সূরাতে রয়েছে সর্বমোট ২৮৬টি প্রসিদ্ধ আয়াত ও ৪০টি রুকু, আর সেই আয়তগুলোর মাঝে আয়াতুল কুরসি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, আলোচিত, ও পঠিত, বিশ্বের সব দেশের মুসলিম মুসলিম সম্প্রদায় আয়াতুল কুরসিকে গুরুত্বের সহকারে দেখে ও এটি দৈনিন্দন জীবনে পাঠ করে থাকে।

আল-বাকারাহ

আল-বাকারাহ শব্দের অর্থ গরু বা গাভী। এ সূরার অষ্টম রুকুর ৬৭ নম্বর আয়াত হতে ৭১ নং আয়াত পর্যন্ত প্রত্যেকটি আয়াতে বাকারা শব্দটির উল্লেখ থাকার কারণে গােটা সূরার নামকরণ করা হয়েছে- ‘আল-বাকারা। অন্য বর্ণনায় আছে, এ সূরার মধ্যে বনী ইসরাঈল জাতির গাে-বৎস পূজার তীব্র প্রতিবাদ এবং হযরত মূসা (আ) কর্তৃক গরু কুরবানি প্রথা প্রবর্তনের প্রসঙ্গ রয়েছে। তাই এ সূরার নাম রাখা হয়েছে ‘সূরা আল-বাকারাহ’।

aitul kursi bangla
ছবিঃ Aitul Kursi Bangla

আয়াতুল কুরসি বাংলা – Aitul Kursi Bangla

আয়াতুল কুরসিতে সর্বমোট রয়েছে ১০টি লাইন, নিচে Aitul Kursi Bangla উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ দেওয়া হল।

বাংলা উচ্চারণ
বাংলা অর্থ
আরবি উচ্চারণ
আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া
আল্লাহ,তিনি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই
اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُو ج
আল হাইয়্যুল ক্কাইয়্যুম
তিনি চিরঞ্জীব (অমর), চিরস্থায়ী/সবকিছুর ধারক।
ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّوم ج
লা তা’খুজুহু সিনাত্যু ওয়ালা নাউম
তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়।
لَا تَأْخُذُهُۥ سِنَةٌ وَلَا نَوْم ج
লাহু মা ফিসসামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্
আকাশ ও ভূমিতে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর।
لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ قلے
মান যাল্লাযী ইয়াশ ফাউ ইনদাহু ইল্লা বি ইজনিহ
কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তার অনুমতি ছাড়া?
مَن ذَا ٱلَّذِى يَشْفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذْنِهِۦ ج
ইয়া লামু মা বাইনা-আইদীহিম ওয়ামা খ্বলফাহুম
দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন।
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُم صلے
ওয়ালা ইয়ুহিতুনা বিশাইয়িম মিন ইলমিহী ইল্লা বিমা শা আ
এবং তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু তা ব্যতীত – যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন।
وَلَا يُحِيطُونَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآء ج
ওয়াসিয়া কুরসি ইউহুস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ
এবং তাঁর পদাসন/পা রাখার স্থান সমস্ত আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টিত করে আছে।
وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْض صلے
ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা
আর সেগুলোর দেখাশোনা-রক্ষণাবেক্ষণ করতে তিনি ক্লান্তিবোধ করেন না।
وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفْظُهُمَا ج
ওয়াহুয়াল আলিয়্যূল আজী-ম।
আর তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ
ayatul kursi bangla

আয়াতুল কুরসি ভিডিও

নিচে আয়াতুল কসরির বাংলা ভিডিও দেওয়া হলো শুনার জন্যে।


মধুর কণ্ঠে আয়াতুল কুরসির

আয়াতুল কুরসি ফজিলত

আয়াতুল কুরসির ফজিলত বলে শেষ করা যাবেনা, এই আয়তটি আগেই বলা হয়েছে বহুল পঠিত, এমন কি হাদিসে বলা হয়েছে আয়াতুল কুরসিকে বেশি বেশি পড়ার জন্য, তাই বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই আয়তকে প্রতিদিনের ওজিফা মনে করে।

  • হাদিসে বর্ণিত আছে, আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “যে ঘরে নিয়মিত আয়াতুল কুরসি পাঠ করা হয় সে ঘর থেকে শয়তান পালাতে শুরু করে। (হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ))
  • উবাই বিন কা’ব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ উবাই বিন কা’বকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার কাছে কোরআন মজিদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল্ হাইয়্যূল কাইয়্যূম) তারপর রাসূলুল্লাহ্ নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেন, আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। (মুসলিম ১৩৯৬)
  • আবু উমামাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, যে ব্যাক্তি প্রতেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতিত আর কোন বাঁধা থাকবে না। (নাসায়ী ৯৪৪৮ তাবারানী ৭৮৩২)


আয়াতুল কুরসির ফজিলত

এছাড়া আয়াতুল আয়াতুল কুরসি নিয়ে রয়েছে আরো অসংখ্য হাদিস, যার প্রত্যেকটি হাদিসেই এই আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে বলা হয়েছে।

আয়াতুল কুরসি ওয়াজ

যদি Aitul Kursi নিয়ে খুব সুন্দর ইসলামিক ব্যাখ্যা বা ওয়াজ শুনতে চান তাহলে অবশ্যই নিচের ওয়াজটি দেখতে পারেন।


আয়াতুল কুরসির ফজিলত || মতিউর রহমান মাদানী

এই ব্লগের কোন লেখায় তথ্যগত কোন ভুল থাকলে আমাদের Contact পেইজে সরাসরি যোগাযোগ করুন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তথ্য যাচাই করে লেখা আপডেট করে দিবো।

এই ব্লগের কোন স্বাস্থ বিষয়ক পোস্টের পরামর্শ নিজের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের মতামত নিবেন, আমরা স্বাস্থ বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞ না, আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ হচ্ছে সঠিক তথ্য পরিবেশন করা। সুতারাং কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায়ভার অবশ্যই আমরা নিবো না।

ধন্যবাদ, ব্লগ কর্তৃপক্ষ।

Author

Leave a Comment

Scroll to Top