কিস্তি বা ডাউন পেমেন্ট কি? কীভাবে কিস্তিতে মোবাইল কিনবেন?

কিস্তিতে মোবাইল

Last Updated on May 14, 2022 by Mijanur Rahman

কিস্তি বা ডাউন পেমেন্ট কি? কীভাবে কিস্তিতে মোবাইল কিনবেন?

কিস্তিঃ কোন কোম্পানি/সংস্থা/ প্রতিষ্ঠান অথবা কোন পন্য ক্রয় করার পর সাপ্তাহিক, মাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিক টাকা জমা দেয়াকে কিস্তি বলা হয়। এই পদ্ধতিটিকে জনগনের জন্য আর্থিক সেবা হিসেবেও বিবেচিত করা হয়। এই পদ্ধতিটি  হল এক ধরনের ব্যক্তিগত লোন যা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অল্প অল্প করে পেমেন্ট পরিশোধ করতে হয়। 

ডাউন পেমেন্টঃ এবার ডাউন পেমেন্ট এর বিষয়টি বুঝিয়ে বলছি ধরুন আপনি একটি পন্য কিনতে যাচ্ছেন, সেই পন্যটির দাম ১০০ টাকা। আপনি যেহেতু ডাউন পেমেন্ট  এর মাধ্যমে সেই পন্যটি কিনবেন তাহলে আপনাকে সেই পন্যটির কেনার জন্য কিছু পরিমান টাকা আগেই  জমা দিতে হবে। তারপর আপনাকে  কিস্তির মাধ্যমে পুরো টাকা অল্প অল্প করে পরিশোধ করতে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডাউন পেমেন্ট ২০% থেকে সর্বোচ্চ ৬০% পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ আপনি ১০০ টাকার একটি পন্য কিনলে আপনাকে ২০ থেকে ৬০ টাকা আগেই পরিশোধ করতে হবে। আশাকরি ডাউন পেমেন্ট এর ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন।

কিস্তিতে মোবাইল
কিস্তিতে মোবাইল কিনার জন্য ক্রেডিট কার্ড আলাদা সুবিদা দিয়ে থাকে।

কিস্তি কিভাবে কাজ করে?

কিস্তির ব্যাপারটি হল এমন যে আপনি হয়ত একটি পন্য কিনতে চাচ্ছেন কিন্তু ওই পন্যটি তাৎক্ষনিক টাকা না থাকার কারনে কিনতে পারছেন না বা অনেকগুলো টাকা একসাথে খরচ করতে চাচ্ছেন না। তাহলেই  এই কিস্তি বা ডাউনপেমেন্ট এর সুবিধাটি আপনার জন্যই। আপনি যেইখান থেকে এই কিস্তি ভিত্তিক পন্যটি কিনবেন সেইখানের নিয়ম অনুসারে আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর পর এর কিস্তিটি পরিশোধ করতে হবে বা টাকা পরিশোধ করতে হবে। এর সুবিধা হচ্ছে আপনি অনেক দীর্ঘদিন ধরে এই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। কিস্তিতে পন্য কিনতে হলে, আপনি যেই কোম্পানি থেকে পন্যটি কিনবেন সেই কোম্পানির নিয়ম অনুসারে আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট করে দেয়া হবে। যাতে আপনি সহজে আপনার কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন। আপনার টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়ে গেলে আপনার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার একটি কিস্তি বছর ভিত্তিক হয় তাহলে আপনাকে মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে হতে পারে। অনেক সময় কিস্তিতে একটি নির্দিষ্ট সুদের হার থাকে। যা আপনার কিস্তির সাথে পরিশোধ করতে হবে।

 কিস্তিতে মোবাইল কীভাবে কিনবেন?

আপনারা যারা নতুন মোবাইল কেনার জন্য চিন্তা করেছেন, কিন্তু আর্থিক দিক চিন্তা করে কিনতে পারছেন না তাদের জন্য সহজ কিস্তির সুবিধা দিয়ে থাকে মোবাইল কোম্পানিগুলো। মোবাইল এর কিস্তিগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাস ভিত্তিক হয়ে থাকে। আপনাকে প্রতি মাসে অল্প অল্প করে টাকা পরিশোধ করতে হবে। দামি মোবাইল বা স্মার্টফোনগুলোতেই কিস্তির সুবিধা বেশি দেয়া হয়। যাতে আপনি খুব সহজেই আপনার সাধ্যের বাইরে গিয়েও আপনার পছন্দের মোবাইল ফোনটি কিনতে পারেন। 

কি কি উপায়ে কিস্তিতে মোবাইল কিনতে পারবেন?

আপনারা যারা কিস্তিতে মোবাইল কিনার কথা ভাবছেন তারা প্রধানত ২টি উপায়ে মোবাইল ফোন কিনতে পারবেন।

১) নগদ কিস্তির মাধ্যমে।

২) ক্রেডিট কার্ড কিস্তির মাধ্যমে।

এই পদ্ধতিতে সুদের একটি ব্যাপার রয়েছে। সাধারনত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৪ মাস ভিত্তিক কিস্তি গুলোতে কোন প্রকার সুদ বা মুনাফা দিতে হবে না। কিন্তু আপনি যদি ৬ মাস বা বছর ভিত্তিক কিস্তিতে মোবাইল ফোনটি কিনেন তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত টাকা বা সুদ দিয়ে মোবাইলটি কিনতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আপনার  সুদের হার ১০% থেকে ১৫% পর্যন্ত হতে পারে। 

কিস্তিতে মোবাইল কিনতে কি কি প্র‍য়োজন?

কিস্তিতে মোবাইল কিনতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ডাউন পেমেন্ট করতে হবে। যা আমাদের দেশের মোবাইল বিক্রেতারা ২০% থেকে ৬০% ডাউন পেমেন্ট নিয়ে থাকে। ডাউন পেমেন্ট এর বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে মোবাইল কিনতে হলে আপনার যেই কাগজপত্র প্রয়োজন হবে, সেই ব্যাপারে নিম্নে আলোচনা করা হলঃ 

  • সর্বপ্রথম ব্যাপারটি হচ্ছে গ্রাহককে  অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • গ্রাহকের এন আইডি কার্ড এর ফটোকপি লাগবে। এন-আইডি কার্ড যদি না থাকে তাহলে জন্মনিবন্ধনের এর ফটোকপি লাগবে।চ
  • গ্রাহকের একজন গ্যারান্টর এর প্রয়োজন হবে। সেই গ্যারান্টর এর এন-আইডি কার্ড অথবা জন্মনিবন্ধনের এর ফটোকপি লাগবে
  • গ্যারান্টর এর উপার্জন ক্ষমতা দেখাতে হবে।
  • গ্যারান্টর সহ যিনি মোবাইলটি কিনবেন অর্থাৎ গ্রাহকের পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি লাগবে।

মোবাইল কোম্পানি ভিত্তিক কিস্তির ব্যবস্থা।

আপনাদের সুবিধার্থে বাংলাদেশে বেশ কিছু মোবাইল কোম্পানির কিস্তির সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ 

ওয়ালটন কোম্পানিঃ

আপনি যদি আপনার ফোনটি ওয়ালটন কোম্পানি থেকে কিস্তির মাধ্যমে কিনতে চান তাহলে ওয়ালটন আপনাকে সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত এই সুবিধা দিবে।ওয়ালটন মোবাইল ৩০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত দামের মোবাইলগুলো কিনতে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কিস্তি প্রদান করা হবে। আপনি যদি ১০ হাজার টাকা থেকে বেশি দামের ফোন কিনেন তাহলে সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত কিস্তির সুবিধা রয়েছে। 

কিস্তিতে মোবাইল
গ্রামীন ফোন অনলাইন শপে কিস্তিতে যেসব মোবাইল পাওয়া যাচ্ছে তার অংশ বিশেষ

রবি সিম কোম্পানিঃ

রবি সিম কোম্পানি ৬ মাস থেকে ১ বছর মেয়াদি কিস্তির সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে রবি ২৪ মাসেও কিস্তি পরিশোধ করার সুবিধা দিয়ে থাকে। আপনি যদি রবি সিম ব্যবহার করে থাকেন বা রবির গ্রাহক হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই সুবিধা পাবেন। আমরা হয়ত অনেকেই জানি না যে রবির অফিসিয়াল মোবাইল স্টোর রয়েছে। আপনি চাইলে রবির সেই স্টোর থেকে মাস ভিত্তিক কিস্তির মাধ্যমে আপনার পছন্দের ফোনটি কিনে নিতে পারবেন। রবি থেকে ফোন কেনার সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হল, যে আপানার কোন ক্রেডিট কার্ড এর প্রয়োজন হবে না। আপনি রবি এপস এর মাধ্যমে কিস্তিতে মোবাইল কেনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

স্যামসাং কোম্পানিঃ

 এই কোম্পানিও ৬ মাস থেকে ১২ মাস মেয়াদী কিস্তির সুবিধা প্রদান করে থাকে। স্যামসাং থেকে মোবাইল কেনার একটি বড় সুবিধা হচ্ছে আপনারা যারা শিক্ষার্থী আছেন তারা খুব সহজ কিস্তিতে স্যামসাং মোবাইল কিনতে পারবেন। একই সাথে চাকরিজীবী, তরুণ–তরুণীদের জন্য বেশ ভাল সুযোগ সুবিধা রয়েছে এই কোম্পানিতে। রবি কোম্পানির মত স্যামসাং কোম্পানিতেও আপনি ক্রেডিট কার্ড ছাড়া মোবাইল কিনতে পারবেন।

গ্রামীণফোন কোম্পানিঃ

আপনারা যারা আইফোন প্রেমি, কিন্তু আর্থিক সংকট বা অন্যান্য কারনে আপনার আইফোন কেনার স্বপ্নটি পুরন করতে পারছেন না তাদের জন্য গ্রামীণফোন নিয়ে এলো ৩৬ মাসে কিস্তি পরিশোধ করার ব্যবস্থা। আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলেই কেবল এই সুবিধাটি নিতে পারবেন। এছাড়াও গ্রামীণফোনের আরও অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে গ্রাহকদের ফোন কেনার জন্য।

বিঃদ্রঃ এই ব্লগের প্রত্যেকটা ব্লগ পোস্ট Sylhetism ব্লগের নিজস্ব ডিজিটাল সম্পদ। কেউ ব্লগের কোন পোস্ট কিংবা আংশিক অংশ ব্লগের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কপি পেস্ট করে অন্য কোথাও প্রকাশ করলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার অধিকার রাখে। এবং অবশ্যই কপিরাইট ক্লাইম করে যে মাধ্যমে এই ব্লগের পোস্ট প্রকাশ করা হবে সেখানেও অভিযোগ সাবমিট করা হবে।

ধন্যবাদ, ব্লগ কর্তৃপক্ষ।

Author

3 thoughts on “কিস্তি বা ডাউন পেমেন্ট কি? কীভাবে কিস্তিতে মোবাইল কিনবেন?”

  1. আমি একটা স্যামসাং মোবাইল কিস্তিতে নিতে চাই, এর জন্য আমি কুতায় যোগাযোগ করব, দয়া করে আমাকে জানিয়ে দিবেন, ধন্যবাদ।

  2. কিস্তিতে মোবাইল নিতে আপনি প্রথমে বিভিন্ন সিম কম্পানির ওয়েব সাইটে দেখেন তারা স্যামসাং ব্রান্ডের মোবাইল কিস্তিতে কিনার সুবিদা দিচ্ছে কি না, যদি দিয়ে থাকে তাহলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

    অথবা, আপনার নিকটস্থ স্যামসাং শুরুমে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন এমন সোযগ সুবিদা আছে কি না। মূলত সিম কম্পানিগুলাই বেশি কিস্তিতে মোবাইল কিনার সুযোগ দিয়ে থাকে। তাই প্রথমে তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার সাজেশন রইলো।

    ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top